সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াইয়ে নজর গোটা বিশ্বের। রুশ বোমাবর্ষণে কার্যত ধ্বংসস্তূপ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-সহ বেশ কয়েকটি শহর। বিদেশি অস্ত্রে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ক্রমে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। কিন্তু কিয়েভের শত আর্তি সত্বেও সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে বা সেনা পাঠাতে নারাজ আমেরিকা ও ন্যাটো। এহেন পরিস্থিতিতে ন্যাটো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের মসজিদে বিস্ফোরণে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, হামলার দায় স্বীকার ইসলামিক স্টেটের]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ন্যাটো জোটের কাছে ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি। শুক্রবার সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ন্যাটো। এহেন সিদ্ধান্তের সপক্ষে ন্যাটো জোটের যুক্তি, ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করলে রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তারপরই ক্ষোভ উগরে দেন জেলনস্কি। তাঁর বক্তব্য, “ইউক্রেনের আকাশপথকে সুরক্ষা দিতে নারাজ ন্যাটো। তারা এমন একটা ধারণা তৈরি করেছে যে আকাশপথ বন্ধ করলে সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বেধে যাবে। এটা এমন দুর্বল ও অনিশ্চয়তায় জর্জরিতদের ধারণা যাদের কাছে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি অস্ত্র রয়েছে। আজ থেকে সব মৃত্যুর দায় ন্যাটোর।”
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিয়েভ, খারকভ-সহ বেশ কয়েকটি শহর এখন অবরুদ্ধ। প্রবল লড়াই চালিয়ে এপর্যন্ত ৯ হাজার রুশ সেনাকে খতম করার দাবি করেছে ইউক্রেন। একইসঙ্গে, প্রতিপক্ষের ২৮০টি ট্যাঙ্ক, ২৫টি যুদ্ধবিমান ও কয়েকশো সাঁজোয়া গাড়ি ধ্বংস করার দাবি করেছে কিয়েভ। পালটা মস্কো জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাঁদের ৪৯৮জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।
বলে রাখা ভাল, গোড়া থেকেই ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মিসাইল, বোমা ও যুদ্ধবিমান-সহ যুদ্ধের সরঞ্জাম সরবরাহ করছে ন্যাটো ও আমেরিকা। কিন্তু শুধু সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েই দায় সেরেছে তারা। সেই বিষয়ে জেলেনস্কির বক্তব্য, “এখনই পদক্ষেপ করুন নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। পুতিন ইউক্রেনকে সিরিয়া বানিয়ে ফেলবেন। এমনটা হতে দেবেন না।”
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করলে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক জোটটির প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন, “ইউক্রেনের আকাশে নো ফ্লাই জোন তৈরি করতে হলে ন্যাটোকে যুদ্ধবিমান পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে হানাদার রুশ ফাইটার জেটগুলিকে গুলি করে নামতে হবে। আর তেমনটা হলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ব আমরা।”