সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আড়াই বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এখনও থামেনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। হানাহানি, মৃত্যুমিছিল সব কিছুই জারি রয়েছে। এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামানো নিয়ে একাধিকবার শান্তি বৈঠক হলেও, কোনও রফাসূত্র মেলেনি। এবার রুশবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের মাঝেই আমেরিকায় গেলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটনে পা রাখার আগে তিনি জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নাকি যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তাই কি 'পথ' খুঁজতে বন্ধু দেশে গেলেন জেলেনস্কি?
গত আড়াই বছর ধরে মাটি কামড়ে রণক্ষেত্রে লড়াই করছে ইউক্রেনীয় সেনা। রাশিয়াকে একচুল জমি ছাড়তে নারাজ তারা। এই যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে আমেরিকা। মার্কিন অস্ত্রবলে রুশ ফৌজকে পালটা মার দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি বদলে জেলেনস্কির 'লিলিপুট' বাহিনী। কিন্তু নিজেদের দাবি বজায় রেখেই এবার শান্তির পথে হাঁটতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। রয়টার্স সূত্রে খবর, রবিবার আমেরিকায় পৌঁছন জেলেনস্কি। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার বৈঠকে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। সাক্ষাৎ হতে পারে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সঙ্গেও। সকলের সঙ্গেই জেলেনস্কি চলমান যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে খবর।
এদিন আমেরিকার বিমান ধরার আগে এক্স হ্যান্ডেলে জেলেনস্কি লেখেন, 'কয়েকমাসের মধ্যেই যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়।' এর পর বন্ধু দেশে পৌঁছে তিনি স্ক্র্যান্টন ও পেনসিলভ্যানিয়ায় অস্ত্র তৈরির কারখানা পরিদর্শন করেন। জানা গিয়েছে, ইউক্রেনকে আরও বেশি সংখ্যায় সমরাস্ত্র দেওয়া নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন জেলেনস্কি। ওই কারখানাগুলো ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, "রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের যা যা করণীয় ছিল তা সব করেছি। অস্ত্রও ব্যবহার করেছি। কূটনৈতিক বৈঠক করেও দেখেছি। আমাদের সহযোগীরা রাশিয়াকে শান্তির পথে ফেরাতে নানা পদক্ষেপ করেছে।" সূত্রের খবর, জেলেনস্কির এই সফরের পর ফের ইউক্রেনের জন্য বড় অঙ্কের সামরিক সাহায্য ঘোষণা করবে হোয়াইট হাউস।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিশেষ সামরিক অভিযান ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাঁধভাঙা জলের জেলেনস্কির দেশে ঢুকে পড়ে রুশ ফৌজ। তার পর থেকে জারি রয়েছে লড়াই। এই হানাহানি, রক্তপাতের মাঝেই গত আগস্ট মাসে ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জেলেনস্কিকে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সংঘাত থামনোর ব্যাপারে বাইডেনকে ‘নীল নকশা’ দেবেন জেলেনস্কি। তবে কয়েকটি শর্তও রয়েছে। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “আমাদের পরিকল্পনার প্রথম পয়েন্টই হল রাশিয়াকে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করা। আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, যা ইউক্রেনের জন্য ন্যায্য হবে সেটাই করা হবে।” ফলে এখন রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় যুদ্ধ নিয়ে জেলেনস্কি কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর বিশ্বের।