স্টাফ রিপোর্টার: প্রথম ও দ্বিতীয় দফার চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের হার প্রকাশ হতেই প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশন। কীভাবে আচমকা ভোট গ্রহণের হার বেড়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। কেনই বা প্রথম দফার ভোটের ১১ দিন বাদে আর দ্বিতীয় দফার চার দিন বাদে কত মানুষ ভোট দিয়েছে তা প্রকাশ করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
প্রতিবার ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের তরফে কত শতাংশ ভোট পড়েছে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এবার তা হয়নি। তাই নির্বাচন কমিশনের উপর বিজেপির প্রভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল ও বামেদের। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল ও বামেরা। কমিশন মঙ্গলবার রাতে প্রথম দুই পর্বের যে ভোটের হার বের করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দফায় ৬৬.১৪% এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১% ভোট পড়েছে। অথচ দ্বিতীয় দফার ভোট শেষের পর কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল ভোট পড়েছে ৬০.৯৬%। চূড়ান্ত হিসেবে দ্বিতীয় দফার ক্ষেত্রে কী করে ৫.৭৫% ভোট বেড়ে গেল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
[আরও পড়ুন: তফসিলিদের সংরক্ষণ কেড়ে মুসলিমদের দিতে দেব না! সরব মোদি, চিঠি দলীয় প্রার্থীদের]
দেশজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিরোধীরা। অভিযোগের তীর কমিশনের দিকে। অভিযোগ, কমিশন ভোট গ্রহণের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। বিষয়টি প্রথম নজরে আনেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের তরফে দেওয়া তথ্য প্রমাণ করে কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক ডি দেবরাজন ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। কীভাবে আচমকাই ৫.৭৫% ভোট বেড়ে গেল, তা তাঁরা জানতে চেয়েছেন।
এদিকে, এবারের লোকসভা ভোটে প্রথম দুই পর্বে ভোট কম পড়া নিয়ে এখন মাথাব্যথা নির্বাচন কমিশনের। পরের পাঁচ পর্বে ভোটের হার বাড়াতে ভোটারদের সরাসরি এসএমএস করার নিদান দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। মঙ্গলবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক ও অন্য শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও বৈঠক করেন রাজীব কুমার। হয়ে যাওয়া দুই পর্বের বিশ্লেষণ, আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি ভোটের হার কমে যাওয়া নিয়েই নির্বাচন কমিশনকে সব থেকে বেশি চিন্তিত দেখিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান, ঘোষিত টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের দল]
কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ভোট কম পড়ার জন্য মূলত দেশজুড়ে প্রবল দাবদাহকেই ভিলেন বলে মনে করেছেন সবাই। রাজীব কুমার ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও এ বিষয়ে একমত। তার পরও সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকদের উদ্দেশে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশ, ‘‘ভোট দিতে আসায় উৎসাহ বৃদ্ধিতে ভোটারদের সরাসরি এসএমএস করুন।’’ রাজ্যে আগামী ৭ মে তৃতীয় দফায় ভোট সন্ত্রাসদীর্ণ মুর্শিদাবাদ ও মালদহের চার কেন্দ্রে। যে ভোট শান্তিতে করানো বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের সামনে।