সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : ‘ও মাই গড’! বেঙ্গালুরু দক্ষিণ থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর এটাই প্রথম অভিব্যক্তি ছিল সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী তেজস্বী সূর্যর। কর্ণাটকের বিজেপি সভাপতি বি এস ইয়েদুরাপ্পা এই আসনের জন্য পাঁচবারের সাংসদ ও প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারের স্ত্রীর নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু, পরে জল্পনা চলছিল বারাণসীর পাশাপাশি এই আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু, সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এই আসনে পেশায় আইনজীবী ২৮ বছরের তেজস্বী সূর্যর নাম চূড়ান্ত করল বিজেপি।
এরপরই এবার লোকসভায় বিজেপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী তেজস্বী সূর্য টুইট করেন, “ও মাই গড ! আমি বিষয়টি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের প্রধান এবং সবথেকে বড় রাজনৈতিক দলের সভাপতি বেঙ্গালুরু দক্ষিণের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী আসনে লড়াইয়ের জন্য ২৮ বছরের যুবকের প্রতি ভরসা রেখেছেন। এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র আমার দল বিজেপিতেই ঘটে। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদির নিউ ইন্ডিয়াতেই সম্ভব !”
[আরও পড়ুন-আত্মসম্মানে আঘাত লেগেছে, কানহাইয়ার বিরুদ্ধে লড়া নিয়ে উলটো সুর গিরিরাজের]
১৯৯৯ সালে কংগ্রেসের বি কে হরিপ্রসাদকে হারিয়ে এই আসনে প্রথম জয়ী হয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ অনন্ত কুমার। তারপর থেকে টানা পাঁচবার এই আসন থেকেই জিতে আসছিলেন তিনি। কিন্তু, গত বছর তাঁর মৃত্যুর পর স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের ধারণা ছিল ২০১৯-এর নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তাঁর স্ত্রী ৫৩ বছরের তেজস্বনী অনন্ত কুমার। নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটের দিন ঘোষণার পর কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে প্রচারও শুরু করেছিলেন। কিন্তু, সোমবার গভীর রাত বৈঠকের পর বিজেপির তরফে যখন তেজস্বী সূর্যর নাম ঘোষণা হয় তখন হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা।
[আরও পড়ুন-কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ছেন উর্মিলা! জোর জল্পনা মুম্বইয়ে]
এপ্রসঙ্গে নিজের হতাশা গোপন রাখেননি তেজস্বনী অনন্ত কুমারও। একটি সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিষয়টির উল্লেখও করেন তিনি। বলেন,”এটা আমার ও আমার কর্মীদের কাছে খুবই বেদনাদায়ক। কিন্তু, পরে আমি নিজেকে বোঝাই যে এটা আমাদের বিচক্ষণতা দেখানোর সময়। আমরা যে অন্য দলগুলোর থেকে আলাদা তা বোঝানোরও। আমি দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলব তাই কোনও প্রশ্ন করতে চাই না। সত্যি যদি আমরা দেশের জন্য কিছু করতে চাই তাহলে আমাদের উচিত মোদিজির জন্য কাজ করা।”
সেনাবাহিনীর জওয়ানরা যেমন নিজের পরিবারের কথা চিন্তা না করেই দেশরক্ষার জন্য আত্মবলিদান দেন, এপ্রসঙ্গে সেই বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন তেজস্বনী। বলেন, “আমার স্বামী এত বছর ধরে দেশের নিঃস্বার্থ সেবা করেছেন। আমরা সবসময়ই মনে করি যে আগে দেশ, তারপর দল ও সব শেষে নিজের স্বার্থ। আর এই পরিস্থিতিতে সেটাই প্রমাণ করতে হবে।”
তেজস্বনী অনন্ত কুমারকে মায়ের মতো বলে উল্লেখ করে তেজস্বী সূর্য বলেন, “আমার হাই স্কুলের দিনগুলোর সময় উনি আমার মায়ের মতো ছিলেন। বেঙ্গালুরু দক্ষিণ থেকে আমার ভোটে দাঁড়ানোর কথা শুনে আমাকে আর্শীবাদও করেছেন তিনি।”
বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, দলের পথপ্রদর্শক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে তেজস্বীর অনেক পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। একসময়ে এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিলেন সূর্য। বর্তমানে কর্ণাটক বিজেপির আইটি সেলের দায়িত্বও সামলাচ্ছিলেন তিনি। অ্যারাইজ ইন্ডিয়া নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তৈরি করেছেন। এর পাশাপাশি আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন কর্ণাটক হাই কোর্টও। বেঙ্গালুরু দক্ষিণ আসনে তাঁর বিরুদ্ধে দু’দশক পরে প্রার্থী হচ্ছেন কংগ্রেসের বি কে হরিপ্রসাদ। ১৯৯৯ সালে অনন্ত কুমারের কাছে পরাজিত হওয়ার পর ফের এবারই এই আসন থেকে লড়াই করতে নামছেন তিনি।
The post ‘বিজেপিতেই সম্ভব’, মাত্র ২৮ বছর বয়সে পদ্মশিবিরের প্রার্থী হয়ে অবাক সূর্য appeared first on Sangbad Pratidin.