সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের মধ্যেই সংঘাতে জড়িয়েছে রাশিয়ার দুই বাহিনী। গত শনিবার রুশ সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। যিনি এককালে ‘পুতিনের রাঁধুনি’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে প্রিগোজিনের ‘সেনা অভ্যুত্থানে’ তাই উদ্বিগ্ন রুশ প্রশাসন। রাশিয়ার এই ঘটনাচক্রের দিকে নজর ছিল সকলের। তবে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদলে মস্কোর দোরগোড়া থেকে ফিরে আসে ওয়াগনার বাহিনী। কিন্তু তাতেও কি চিন্তা কমল রুশ প্রধানের?
ফরেন পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের এক সদস্য রব লি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধে বড় কোনও ভূমিকা নিচ্ছে না ওয়াগনার। তাই এই যুদ্ধের আবহে প্রিগোজিনের এই সিদ্ধান্ত খুব একটা বিপদে ফেলবে না রাশিয়াকে। লি টুইটারে জানিয়েছেন, “মে মাসের শেষ ও জুনের শুরুতে ইউক্রেনের বাখমুট থেকে ওয়াগনার বাহিনীকে সরিয়ে নিয়েছিল রুশ প্রশাসন।”
উল্লেখ্য, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে এই বাখমুট অঞ্চলেই সব চেয়ে বেশি সংঘাত হয়েছিল। তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধে সামনের সারিতে নেই ওয়াগনার বাহিনী। লি আরও বলেন, ওয়াগনার বাহিনী মূলত আক্রমণে সিদ্ধহস্ত। ডিফেন্স বা ফ্রন্টলাইনে প্রতিরক্ষার জন্য তাদের তৈরি করা হয়নি। ইউক্রেন পালটা আক্রমণ শুরু করেছে। ফলে ময়দানে ওয়াগনারের গুরুত্ব আপাতত কম।
[আরও পড়ুন: মোদির মুকুটে নয়া পালক, মিশরের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন প্রধানমন্ত্রী]
রবিবার ফ্রন্টলাইন থেকে আসা ইউক্রেনের সৈনারা জানিয়েছে, বাখমুটে ওয়াগনার বাহিনীর দাপট দেখা যায়নি সেভাবে। অবস্থান খুব একটা চোখে পড়ার মতো ছিল না। অন্যদিকে, মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রবিবার জানিয়েছেন, “ওয়াগনার বাহিনীর এই অভ্যুত্থান পুতিন শাসনে আসল ফাটল।” ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও একই সুরে বলেছেন, “এই ঘটনা রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর মধ্যে বিভাজনকেই স্পষ্ট করে।”
মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন প্রিগোজিন। ওয়াগনার বাহিনীর প্রধানকে পালটা আক্রমণ করে পুতিন বলেছিলেন, ” ওরা পিঠে ছুরি মেরেছে, এর বদলা নেওয়া হবে।” এরপর হঠাৎই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন প্রিগোজিন। সুতরাং, পুতিন ও প্রিগোজিনের এই বিরোধ কোন দিকে এগোবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এই বিরোধ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেই বা কী প্রভাব ফেলবে, তাও স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনে আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে এই ঘটনা পুতিনের জন্য কতটা বাধা সৃষ্টি করবে সেটাও এই মুহূর্তে পরিষ্কার নয়।