সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একমাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine War) যুদ্ধ। এখনও নিষ্পত্তি হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই যুদ্ধের। রুশ (Russia) বাহিনীর বিরুদ্ধে অভাবনীয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনীয় (Ukraine) সেনা। কিন্তু এর মূল্যও চোকাতে হচ্ছে পুরোদমে। যুদ্ধের আঁচে সব দিক থেকেই ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেন। এর মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও। কলেরা (Cholera), কোভিড (COVID-19) ও অবসাদ বৃদ্ধির আশঙ্কায় বিপণ্ণ সাধারণ মানুষের জীবন।
ইউক্রেনে অবস্থিত WHO দপ্তর জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পরিস্থিতি ভয়াবহ। দূষণমুক্ত জলের অভাবের পাশাপাশি স্যানিটাজেশন ও স্বাস্থ্য়বিধির ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়িগুলিতে ভেক্টরবাহিত অসুখের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। যার অন্যতম ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও এনসেফেলাইটিসের মতো অসুখ। পাশাপাশি খাদ্যবাহিত ও জলবাহিত অসুখের প্রবণতাই বাড়ছে। বাড়ছে যৌনরোগের আশঙ্কাও। একই ভাবে মানসিক অবসাদেও ভুগছেন অনেকেই। আসলে যুদ্ধ একবার শুরু হলে ট্রমা, আতঙ্কের প্রভাব পড়তে শুরু করে। এর ফলে ভেঙে যাচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যও।
[আরও পড়ুন: গ্যাস-পেট্রলের পর এবার দাম বাড়ছে ৮০০টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের! নাভিশ্বাস আমজনতার]
এদিকে বোমাতঙ্কে শেল্টারে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের একসঙ্গে থাকা এবং সেখানে যথাযথ ভেন্টিলেশনের অভাবে করোনার মতো ছোঁয়াচে অসুখের বাড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। সব মিলিয়ে যুদ্ধের ভয়াবহতাকে বাড়িয়ে ইউক্রেনে লাফিয়ে বাড়ছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুর্ভোগের আশঙ্কাও।
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রুশ ফৌজ। তারপর থেকেই ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াইয়ের দিকে নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের। মুখে পুতিন বাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিলেও সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ফৌজ পাঠাতে অস্বীকার করে আমেরিকা ও ন্যাটো। তাদের আশঙ্কা ইউক্রেনে সেনা পাঠালে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে ন্যাটো। অর্থাৎ ময়দানে জেলেনস্কিকে একাই বিশাল রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। আর ইউক্রেনের সেনার জন্য পরিস্থিতি যে ক্রমে জটিল হয়ে উঠছে তা স্পষ্ট। অভাবনীয় প্রতিরোধ গড়ে তুলছে কিয়েভ। এর ফলে যত সহজে পুতিনের দেশ ইউক্রেন দখল করবে ভাবা গিয়েছিল, তা হয়নি। তবে এই প্রতিরোধের জন্য যে কড়া মূল্য চোকাতে হচ্ছে তাদের, তা আরও একবার পরিষ্কার করে দিচ্ছে সেখানকার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও।