সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্যত যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে জোড়া মিসাইল উৎক্ষেপণ লালফৌজের। এর আগে ওই অঞ্চলে মার্কিন নজরদারি বিমানের আনাগোনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল বেজিং। এহেন পরিস্থিতিতে আমেরিকাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েই যে মিসাইল ছুঁড়েছে চিন তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: সিরিয়ায় ধৃত ২৯ জন পাকিস্তানি জঙ্গি, ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু আমেরিকার]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত জলরাশিতে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে লালফৌজ। ফলে ওই অঞ্চলের আকাশে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে 'নো ফ্লাই জোন' বা বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা। চিনের অভিযোগ, মঙ্গলবার 'নো ফ্লাই' জোনে প্রবেশ করে একটি মার্কিন U-2 নজরদারি বিমান। ২৪ ঘণ্টা পর চিনা ফৌজের গতিবিধি জানতে একই অঞ্চলে আবার টহল দেয় আমেরিকার একটি RC-135S নজরদারি বিমান। তারপরই, আমেরিকার কাছে কূটনৈতিক স্তরে তীব্র প্রতিবাদ জানায় চিন। কিন্তু এতেই ক্ষান্ত না থেকে ওই অঞ্চলে মার্কিন ফৌজকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দুটি অত্যাধুনিক মিসাইল ছুঁড়ে লালফৌজ। জানা গিয়েছে, মিসাইল দু'টির একটি হচ্ছে DF-26। এই ব্যালিস্টিক মিসাইল ৪ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। স্থলে ও জলে আণবিক অস্ত্র নিয়েও হামলা চালাতে পারে এই মিসাইলটি। চিনের ছোঁড়া অন্য ক্ষেপণাস্ত্রটি হচ্ছে, DF-21। এটি ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হামলা চালাতে পারে। বিশেষ করে যুদ্ধবিমানবাহী রণতরীর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য এটিকে তৈরি করেছে লালফৌজ। উল্লেখ্য, গত মাসেই দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক মহড়া চালায় মার্কিন নৌসেনার এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার--USS Nimitz ও USS Ronald Reagan। ফলে বিশ্লেষদের মতে, চাইলে মার্কিন রণতরী ডুবিয়ে দিতে পারে তারা, এই বার্তা দিতেই হাইনান প্রদেশ ও বিতর্কিত পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি অঞ্চলে মিসাইল দু'টি ছুঁড়েছে চিন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ চিন সাগরের প্রায় ৯০ শতাংশ নিজেদের বলে দাবি করে চিন। ফলে ইতিমধ্যেই জাপান, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বেজিং। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই সাগর দিয়েই প্রতিবছর ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয়। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে এই রুটটি অত্যন্ত লাভজনক। এছাড়াও, এশিয়া মহাদেশে মার্কিন প্রভাব খর্ব করতে হলে সবার আগে দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন নৌবহরকে কাবু করতে হবে, তা ভালই জানে চিন। কিন্তু ভারত-সহ একাধিক ফ্রন্ট খুলে রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে লালফৌজ। এহেন সময়ে মার্কিন নৌবহরের উপস্থিতি বেজিংকে সাঁড়াশি চাপে ফেলেছে।