সুমন করাতি, হুগলি: দীপাবলির আনন্দে মেতেছে গোটা দেশ। আলোয় সেজেছে চারপাশ। এই উৎসবের মরশুমে উলটো ছবি বিশ্বের বৃহত্তম মোটর কারখানার শতাধিক কর্মী ও তার পরিবারে। তাঁদের দিন কাটছে বিদ্যুৎ ও পানীয় জল ছাড়াই।
হুগলির হিন্দুস্তান মোটরস কারখানায় গিয়ে দেখা গেল অদ্ভুত ছবি। বিদ্যুতের খুঁটি থাকলেও কয়েকবছর ধরে নেই কোনও আলো। জলের পাইপ থাকলেও পাওয়া যায় না জল। শ্রমিকদের অভিযোগ, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরই বন্ধ হয়ে গিয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম মোটর কারখানা। শ্রমিকদের স্বেচ্ছায় অবসর নিতে বাধ্য করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। যারা এই নির্দেশ মানেনি তাদের পড়তে হয়েছে সমস্যায়। কোয়ার্টারে প্রায় শতাধিক পরিবার থাকলেও কারখানার পক্ষ থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বন্ধ করে দেওয়া হয় পানীয় জল।
এবিষয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সম্পাদক আচ্ছেলাল যাদব বলেন, “এই কারখানা বন্ধ হয়েছিল ২০০৭ সালে। রাজ্যে তখন সিপিএম সরকার। আর সিপিএম শুধু তাদের ইউনিয়ন করে করে বাংলার একের পর এক কারখানা বন্ধ করেছে। সিপিএম বাংলাকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। আর এখন রাজ্যের তৃণমূল সরকার কীভাবে মানুষের জীবনে আলো আনা যায় সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী সব সময় মানুষের কথা ভাবেন। আগে ছিল সিপিএম, এখন তাদের সঙ্গে জুড়েছে বিজেপি। বিজেপির থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তারা কিছু পেলেই সেটা নিয়ে রাজনীতি করে ভেসে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: হাওড়ার ‘বিষ’ বাতাসে কলকাতার দফারফা, কালীপুজোর রাতে জেলায় ফাটল দেদার বাজি]
অন্যদিকে বিজেপি জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় বলেন, “২০১১ সালে মা মাটি মানুষের সরকার গঠন হয় পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে। এর পর সমস্ত কলকারখানা বন্ধ হতে থাকে। এমনকী ২০১৪ সালে এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৩ সালে হিন্দমোটর কারখানার ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষমতা পায় তৃণমূল।” তিনি আরও বলেন, “রাতের অন্ধকার তো দূরে থাক, দিনের বেলায় বন্ধ কারখানার সমস্ত মেশিনপত্র বেরিয়ে যাচ্ছে টেন্ডারের নাম করে। সেই টেন্ডারের টাকা থেকেও শ্রমিকদের ৬ মাসের মাইনে দেওয়া হতো তাহলেও তারা উপকৃত হতেন।” এবিষয়ে আরও অভিযোগ, কাজ চলে গেলে শ্রমিকদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে আর ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ও শ্রমিক নেতাদের চার তলা বাড়ি, গাড়ি হচ্ছে, সবই সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো। কোনও দলই কিছু করবে না, ভোট আসে, ভোট যায় এরপর নেতাদের টিকি দেখা যায় না। কী রাজ্য কী কেন্দ্রীয় সরকার কারওই কোনও হেলদোল নেই। শুধুই নেতাদের পয়সা কামানোর উপায়।