চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে (Nandigram) উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগে থেকেই তৃণমূল (TMC)-বিজেপি(BJP) সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছিল। শুভেন্দু সভা ছাড়তেই সেই অশান্তির আঁচ আরও বাড়ে। স্লোগান, পালটা স্লোগানের পর দু’পক্ষের সমর্থকদের হাতাহাতি শুরু হয়। তা এতটাই চরমে ওঠে যে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হওয়ার পাশাপাশি মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন দু’জন। তাঁদের নন্দীগ্রাম হাসপাতালে ভরতি করাতে হয়। এ নিয়ে দুপুরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সোনাচূড়া।
শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) সভা ঘিরে অশান্তি নতুন কিছু নয়। তাঁর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে এর আগে একাধিকবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে। কিন্তু রাজ্যে ভোট ঘোষণার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের হাতে। একুশের ভোট সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে করাটা কমিশনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরাই এলাকায় আইনশৃঙ্খলার দিকটি নজরে রাখছে। ভোটের আগে তাই কোনও এলাকাতেই বড়সড় গণ্ডগোল বেধে যাওয়া খুব একটা প্রত্যাশিত নয়। অথচ, প্রথম দফা ভোটের মাত্র দিন দশেক আগেই নন্দীগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রই বারবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এদিন অশান্তির খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
[আরও পড়ুন: ‘দিদি বলছেন খেলা হবে, বিজেপি বলছে…”, পুরুলিয়ার সভায় পালটা স্লোগান মোদির]
বৃহস্পতিবার সোনাচূড়ায় ছিল নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর সভা। সভার আগেই তাঁকে উদ্দেশ করে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দেওয়া শুরু হয়। অভিযোগের তির তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাতে তৃণমূল-বিজেপি খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। লাঠালাঠিতে জখম হন দু’পক্ষের পাঁচজন। ঘটনাস্থলে রক্ত ঝরেছে। বিজেপির দাবি, তাঁদের যুব মোর্চা সভাপতির মাথা ফেটেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘাসফুল শিবিরেরও দাবি, তাঁদেরও কয়েকজন আক্রান্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে র্যাফ।
এ নিয়ে খোদ শুভেন্দুর অভিযোগ, তাঁকে নন্দীগ্রামে আটকানোর জন্য তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। পরে তিনি আহতদের দেখতে হাসপাতালেও যান। পরবর্তীতে এই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে ভূতারমোড়-সহ একাধিক এলাকায়। এসবের জেরে বিকেলে কমিশন রিপোর্ট তলব করেছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের যুবককে অপহরণ করে কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা! STF-এর জালে জেএমবি জঙ্গি]
অন্যদিকে, ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী শীতল কপাটের প্রচার চলাকালীন হামলা হয় বলে অভিযোগ। কুঠিঘাট এলাকায় জনসংযোগ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন শীতল কপাট ও ৩ বিজেপি সদস্য। তিনজনের চোট বেশি হওয়ায় তাঁরা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভরতি।শীতল কপাটের অভিযোগ, বিজেপির ভোট বাড়ছে বলে চিন্তিত তৃণমূল, তাই প্রার্থীর উপর হামলা চালাচ্ছে তারা। অন্যদিকে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজির পালটা দাবি, প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ বিজেপির অন্দরেই। নিজেদের সমস্যার জেরেই এই হামলা। তৃণমূলের হাত নেই কোনও।এ ঘটনার প্রতিবাদে ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছে বিজেপি কর্মীরা।