সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ভোট শুরুর ঠিক আগেই এক তৃণমূল (TMC) কর্মীর মৃত্যু ঘিরে উত্তাল ঝাড়গ্রাম। রবিবার রাতে আগুইবনির তৃণমূল কর্মী দুর্গা সোরেনের দেহ উদ্ধার হয় নেতুরা বাজার এলাকায়। অভিযোগ, বিজেপির কর্মী, সমর্থকরা একা পেয়ে তাঁর উপর হামলা চালায়। ব্যাপক মারধর করে তাঁকে রাস্তার ধারে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। রাত আটটার পর পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বছর পঞ্চাশের দুর্গা সোরেনকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ নিয়ে রাতভর অশান্তি জারি ছিল এলাকায়। সোমবার সকালেও চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
মৃত দুর্গা সোরেনের ভাইয়ের অভিযোগ, সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন বলে তাঁকে হত্যা করেছে বিজেপির লোকজন। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানান,”এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর রয়েছে। এখনও থানায় কোনও অভিযোগ হয়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।” উল্লেখ্য, এই নেতুরা এলাকায় এদিন রাত প্রায় সাতটা নাগাদ এক বিজেপির যুব মোর্চার কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পরেই তৃণমূল কর্মী দুর্গা সোরেনকে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনার পর এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা যে রাতেই মৃতদেহের ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাতেই নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের ছাত্রনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
[আরও পড়ুন: ‘সোনার বাংলা গড়ার দাবি গিমিক, ধাপ্পা’, খোদ বিজেপি নেতার পোস্ট ঘিরে তুমুল বিতর্ক]
আগামী ২৭ মার্চ জঙ্গলমহলে ভোট দিয়ে এ রাজ্যে শুরু হচ্ছে একুশের বিধানসভার লড়াই (WB Assembly election)। ওই দিন ভোটদান করবেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারাও। আর তার দিন কয়েক আগেই এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যার ঘটনায় স্বভাবতই আতঙ্ক বাড়ল। বিজেপির তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এই মুহূর্তে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে। নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ায় কমিশনেরও নজরে রয়েছে সার্বিক পরিস্থিতির দিকে। এবার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানো কমিশনের কাছে রীতিমত চ্যালেঞ্জের। তার মধ্যেই ভোটের ঠিক আগে জঙ্গলমহলে তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।