অর্ণব দাস, বারাসত: চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে (Sitalkuchi) কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যু। সপ্তাহখানেক আগের এই ঘটনার রেশ কাটেনি এখনও। কিন্তু পঞ্চম দফায় ফের ফিরল শীতলকুচির স্মৃতি।যদিও এদিন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা (Deganga) বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুড়লগাছায় একটি বুথের কাছে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। প্রচণ্ড শব্দে আতঙ্কিত হয়ে ভোটাররা দেখেন, মাটিতে পড়ে রয়েছে গুলির খোল। সেখানে দাগও তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রবল শোরগোল শুরু হতেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় কমিশন। খানিকক্ষণ পর অবশ্য তা খতিয়ে দেখে কমিশন জানিয়ে দেয়, সিআরপিএফ কোনও গুলি চালায়নি সেখানে।
শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার ১৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ। বসিরহাট, বারাসত মহকুমার মিনাখাঁ, দেগঙ্গা এলাকা সকাল থেকেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত। তারই মধ্যে দেগঙ্গার এক বুথে দুপুরে ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত ঘটনা। সেখানকার কুড়লগাছা এলাকার একটি বুথের সামনে থেকে জমায়েত হঠাতে আচমকাই শূন্যে গুলি ছোঁড়ে নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা সিআরপিএফ। শব্দ শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় ভোটাররা। শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে গুলির দাগ, পড়ে রয়েছে খোল। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা নিয়মশৃঙ্খলা মেনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। বুথ থেকে বেশ খানিকটা দূরে তৃণমূলের ক্যাম্প। সেসময় তাঁরা খেয়াল করেন, কয়েকজন জওয়ান সেখান দিয়ে ঘোরাফেরা করছেন আর বিজেপির কোনও পতাকা নেই দেখে কানাঘুষো করছেন। হিন্দিতে কথা বললেও, সবই বুঝতে পারছিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: বিজেপির তারকা প্রার্থী পার্নো মিত্রকে ঘিরে বিক্ষোভ, ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, ধুন্ধুমার বরানগরে]
এরপর আচমকাই শূন্যে গুলি চলার শব্দ পাওয়া যায়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই সিআরপিএফ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, গুলি চালানো হয়নি। নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। সেসব খতিয়ে দেখে কমিশনের তরফেই জানানো হয়, দেগঙ্গায় কোনও গুলি চলেনি। যদিও প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে দাবি করা হয়েছিল, ‘অবৈধ’ জমায়েত হঠাতে বাধ্য হয়ে শূন্যে গুলি চালানো হয়।
[আরও পড়ুন: ‘ও নিজে তফসিলি’, সুজাতার ‘ভিখারি’ মন্তব্যের সাফাই মমতার]
সপ্তাহখানেক আগেই শীতলকুচির জোড়পাটকির বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে ৪ গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। একুশে বঙ্গের ভোটে এই ঘটনায় উথালপাতাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। এ নিয়ে এখনও তরজা চলছে। তারই মধ্যে আরেক গুলিচালনার ঘটনা সামনে এল। তবে দেগঙ্গার ঘটনা নিয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে কম কমিশনের বিবৃতিতে প্রশ্ন উঠছে ওয়াকিবহাল মহলে। এত দ্রুত গুলি চলেছে কি না, তার প্রমাণ হাতে পেল কীভাবে কমিশন?