সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চম দফার নির্বাচনে রাজ্যের অন্য ৪ জেলার পাশাপাশি ভোট হচ্ছে পাহাড়ের দুই জেলাতেও (দার্জিলিং, কালিম্পং)। স্বাভাবিকভাবেই নজর রয়েছে পাহাড়ের তিন আসনে। দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পং। পাহাড় সংলগ্ন আরও দু’-একটি আসনে পাহাড়ের দলগুলির অল্পবিস্তর প্রভাব থাকলেও, মূলত ওই তিন আসনের ফলাফলের ভিত্তিতেই পাহাড়ের দলগুলির শক্তি-দুর্বলতা নির্ধারিত হয়।
সাম্প্রতিক অতীতে এমন বহুমুখী ভোট পাহাড় দেখেনি। গত এক দশকে পাহাড়ের ভোটে মূল নির্ধারক শক্তি ছিলেন বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। সমতলের যে দলকে তিনি সমর্থন করবেন, জয় তাঁদেরই হবে। এই ছিল পাহাড়ের ভবিতব্য। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি আলাদা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই নেতার প্রভাব এখন অনেকটাই ফিকে। দল এবং জিটিএ দুই জায়গাতেই বিমলের ক্ষমতায় ভাগ বসিয়েছেন বিনয় তামাং। যার ফলস্বরূপ, পাহাড়ের তিন আসনে এবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুই শিবির আলাদা আলাদা করে প্রার্থী দিয়েছে। বিনয় গোষ্ঠী (Vinay Tamang) এবং বিমল গোষ্ঠীর এই লড়াইয়ে আবার নতুন করে মাথা তুলেছে সুবাস ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ (GNLF)। মোর্চার দুই শিবিরই যেখানে তৃণমূলকে সমর্থন করার দাবি করছে, সেখানে জিএনএলএফ লড়ছে বিজেপির হয়ে। যার জেরে পাহাড়ের লড়াই এবার আর দ্বিমুখী নয়, ত্রিমুখী। সেই সঙ্গে রয়েছে সংযুক্ত মোর্চা।
[আরও পড়ুন: দেগঙ্গায় শূন্যে গুলি কেন্দ্রীয় বাহিনীর, স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার স্বয়ং কমিশনের]
বহুমুখী এই লড়াইয়ে জয়ের ব্যাপারে অবশ্য একপ্রকার নিশ্চিত বিমল গুরুং। তাঁর দাবি,”বাংলার মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করে না। গ্রাউন্ড জিরোতে বিজেপির কোনও প্রভাবই নেই। কীভাবে সরকার গড়বে ওঁরা? শুধু হিংসা, দাঙ্গা আর মারামারি করে রাজনীতি হয় না।” গুরুংয়ের দাবি, “আমি বিজেপিকে ১৫ বছর সমর্থন করেছি। বিনিময়ে ওঁরা গোর্খাদের কী দিয়েছে? মোদি আমাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। ৭ বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি।” গুরুংয়ের মতোই আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেল মন ঘিসিংয়ের (Man Ghising) গলাতেও। তাঁর দাবি,”দেখে তো মনে হচ্ছে খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ের সমস্যা মেটাতে সরকারে বদল দরকার। আমরা সুবিচার চাই, আমরা বিজেপির সরকার চাই।” আসলে এই দুই শিবিরের জন্যই এবারের ভোটটা ভীষণ জরুরি। বিশেষ করে বিমল গুরুংয়ের জন্য। পাহাড়ের রাজনীতিতে এখনও যে তিনি প্রাসঙ্গিক, এই ভোটেই তা প্রমাণ করে দিতে চাইবেন মোর্চা নেতা।