অর্ণব দাস: বাংলায় সিনেমা-সিরিয়ালের অবস্থা খারাপ। সেই জন্যই বিকল্প পেশা হিসেবে রাজনীতিকে বেছে নিচ্ছেন তারকারা। নিজের কেন্দ্র বারাসতে প্রচারে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল প্রার্থী চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)।
এর আগে দু’বার বারাসত কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন চিরঞ্জিৎ। দু’বারই জিতেছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। এবার হ্যাটট্রিকের প্রত্যাশায় রয়েছেন ৬৫ বছরের অভিনেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই করোনা (Corona Virus) টিকা নিয়েছিলেন তিনি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার অল্প সময় পরেই বারাসতের রাস্তায় নেমে পড়েন চিরঞ্জিৎ। প্রচারপর্ব সারার ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানেই বলেন, “আমাদের বাংলা ছবির অবস্থাটা খুব খারাপ। কোনও ছবি নেই। হাউস বন্ধ হয়ে গিয়েছে সব। শুটিং হচ্ছে না। তারপর এতদিন ধরে যেটা করোনার জন্য গেল। ফাংশনগুলো নেই। সেই জন্য একটুখানি সাফার করছে ইন্ডাস্ট্রিটা। তাই সেক্ষেত্রে বিকল্প কোনও একটা জায়গা চাইছে তাঁরা। সেক্ষেত্রে যাঁরা ভাবছেন বাংলায় কিছু হবে না, তাঁরা বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন। ওখান থেকেই ট্র্যাকটা পাবে মনে করছেন।”
তাহলে কি প্রফিটের জন্য তারকারা ভোটের আবহে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা জানান, তেমন কোনও ব্যাপার নেই। তাঁর মতো প্রার্থীরা প্রফিটের তাগিদে আসেন না। তবে যাঁরা মানুষের ভাল এবং কল্যাণ করার কথা বলে আসছেন তাঁদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার অন্যতম একটি কারণ কাজ না পাওয়াও। এমনটাই মনে করেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী।
[আরও পড়ুন: ‘নানা ঘাটের জল খাওয়া সাপ-খোপ নিয়ে বিজেপি কী করবে?’ মিঠুনকে বিদ্রুপ তসলিমার]
এদিকে নাম ঘোষণার আগেই বারাসতের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ডা. সনাতন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন চিরঞ্জিৎ। বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে অভিনেতা জানান, তার বিরুদ্ধে বারাসতে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী ডা. সনাতন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন বারাসত জেলা বিজেপির সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “উনি কোনও রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানেন না। এখনও আমাদের দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি। উনি কীভাবে প্রকাশ্যে একজন ডাক্তারের নাম প্রার্থী হিসাবে বলেন?” এ বিষয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানাবেন বলেও এদিন জানান শংকর চট্টোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তারকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করেছে বাম ও বিজেপি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরের দিন বারাসত পুরসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন চিরঞ্জিৎ। তাঁর পাশে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরও। ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ ব্যানারও লাগানো ছিল সাংবাদিক সম্মেলনে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর পুরসভার মতো সরকারি দপ্তরে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যকলাপ নিয়ে বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানিয়েছিল বাম ও বিজেপি। বিষয়টি নজরে আসতেই নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) পক্ষ থেকে বারাসত পুরসভার পুর প্রশাসককে শোকজ করে ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া হয়।