শুভঙ্কর বসু: ভোটের দিন খুচরো অশান্তি। প্রার্থীকে ঘিরে বিক্ষোভ। ঘেরাও। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে এসব মামুলি ঘটনা। কিন্তু একই দিনে দুই মহিলা প্রার্থী আক্রান্ত হওয়ার নজির বঙ্গ-ভোটে খুব একটা নেই। তৃতীয় দফার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা খাঁ (Sujata Khan) ও বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া অধিকারী (Papiya Adhikari) যেভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তাতে কমিশন কর্তাদের কপালে রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ।
সে কারণেই তৃতীয় দফা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বাকি দফাগুলিতে মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তায় জোর দিচ্ছে কমিশন। এই মর্মে ভোটমুখী জেলাগুলিকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে ভোটের দিন প্রার্থীরা সাধারণত একজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী পেয়ে থাকেন। জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশেষত মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সমস্ত মহিলা প্রার্থীর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সশস্ত্র রক্ষীর সংখ্যা আরও এক জন বাড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে কমিশনের। তবে স্পর্শকাতর এলাকার ভিত্তিতে মহিলা প্রার্থীর নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনমতো জেলাগুলিকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও কোনও মহিলা প্রার্থী প্রয়োজনে ভোটের দিন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আবেদন জানাতে পারেন। সংশ্লিষ্ট আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলাগুলিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। বিষয়টি সমস্ত মহিলা প্রার্থীকে অবগত করতেও জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘সিআরপিএফ ঘেরাও’ মন্তব্যের জের, মমতার বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ বিজেপি]
রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের এক কর্তার কথায়, “এমনিতেই মহিলা প্রার্থীরা আবেদন করলেই প্রয়োজনমতো নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়। কিন্তু তৃতীয় দফার পর বিষয়টি নিয়ে কমিশন ঝুঁকি নিতে নারাজ। জেলাগুলিকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।” প্রসঙ্গত দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগের দিন নন্দীগ্রামের সিপিএম (CPM) প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিতে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে দরবার করেছিল সিপিএম। সেইমতো দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মীনাক্ষীর নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: ‘মনে হচ্ছে রাষ্ট্রপতি শাসনে ভোট হচ্ছে’, যাদবপুর থেকে তোপ মমতার]
আগামী ১০ তারিখ চতুর্থ দফায় রাজ্যের ৫ জেলার মোট ৪৪টি আসনে ভোটগ্রহণ রয়েছে। কোচবিহারের ৯টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১১টি, হাওড়ার ৯টি, হুগলির ১০টি ও অলিপুরদুয়ারের পাঁচটি আসনে ভোট হবে। এই সবক’টি আসনে প্রার্থী সংখ্যা ৩৭৩। এর মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও নির্দল মিলিয়ে এক চতুর্থাংশের বেশি মহিলা প্রার্থী রয়েছেন। আপাতত তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।