shono
Advertisement

দফায় দফায় অশান্তিতে উত্তপ্ত রাজ্য, রাতভর বোমাবাজি নানুরে, বর্ধমানে আক্রান্ত প্রার্থী

বর্ধমানের তৃণমূল প্রার্থীর উপর তির নিয়ে হামলার অভিযোগ।
Posted: 10:37 AM Apr 04, 2021Updated: 01:01 PM Apr 04, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ভোটের মুখে দফায় দফায় রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত গোটা বাংলা (West Bengal)। কোথাও রাতভর বোমাবাজি হচ্ছে তো কোথাও আবার সরাসরি প্রার্থীর উপর হামলা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ভোটের মরশুমে বাংলার উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুথী। শনিবার রাতে একদিকে নানুরে রাতভর বোমাবাজি চলে। দুষ্কৃতীরা গোপডিহি গ্রামে তাণ্ডব চালায় বলে খবর। বিজেপির (BJP) অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূল আশ্রিত। অন্যদিকে, রায়নার তৃণমূল প্রার্থী শম্পা ধাড়ার উপর তির নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীর হাত জখম হয়েছে বলেও খবর।

Advertisement

শনিবার রাতভর বোমাবাজি হয় নানুরের গোপডিহি গ্রামে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নানুর থানার পুলিশ। বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন গ্রামের এক মহিলা। ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে নানুর থানার পুলিশ। সামনে বিধানসভা ভোট। এলাকার দখল রাখবে কে? তা নিয়েই অশান্তি বলে খবর। দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে। বিজেপি অভিযোগ, রবিবার বিজেপির মিছিল রয়েছে। তাই শনিবার রাতে বৈঠক করছিল বিজেপি কর্মীরা। সেই সময়েই হামলা চালানো হয়।বিজেপি কর্মীদের বৈঠক লক্ষ্য করে চলে বোমাবাজি। ভয়ে বিজেপি কর্মীরা পালিয়ে যায়। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। এদিন সকালেও গ্রামের পরিস্থিতি থমথমে। চলছে পুলিশের টহল। রবিবার সকালেও গ্রামের রাস্তায় বোমার দাগ স্পষ্ট। উদ্ধার হয়েছে বোমার সুতলি।

ভোটগ্রহণ যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। শনিবার দিনভর পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল (TMC)-বিজেপি সংঘর্ষে রক্তপাতও ঘটে। আক্রান্ত হন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা রায়নার তৃণমূল প্রার্থী শম্পা ধাড়া। তাঁকে লক্ষ্য করে নাকি তিরও ছোড়া হয়! যদিও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। হাতে আঘাত লেগেছে তাঁর। মেমারিতে বিজেপি প্রার্থী ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যর প্রচারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের তুমুল সংঘর্ষ ঘটে। উভয়পক্ষের কয়েকজন জখম হয়েছেন। এমনকী এক শিশুকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নাদনঘাটে পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে দুই দলের সংঘর্ষ কয়েকজন জখম হয়েছেন।

এদিন শম্পা ধাড়া রায়নার বড়বৈনানের দেনো গ্রামে প্রচারে যান। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রায়না-১ ব্লক সভাপতি বামদাস মণ্ডল। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি পার্টি অফিসের পাশ দিয়ে তাদের মিছিলটি যাওয়ার সময় বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। এরফলে দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা তাঁদের দুই জন কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এমনকী, প্রার্থী-সহ মিছিলও আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রায়না থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিজেপির ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শম্পা ধারা বলেন, “আমাদের প্রচার মিছিলে হামলা করে বিজেপির দুষ্কৃতীরা।আমাকে লক্ষ্য করে তির ছোড়া হয়। ধারালো অস্ত্র নিয়ে কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের ৬ জন কর্মী আহত। বিজেপি নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে।” বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, “প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের একশ্রেণির ক্ষোভ ছিল। এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এটা ঘটেছে।”

[আরও পড়ুন : ক্যানিংয়ে তৃণমূল কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ CRPF-এর, পালটা ইঁটবৃষ্টিতে আহত ৬ জওয়ান]

অন্যদিকে, এদিন মেমরির কুচুট এলাকায় নওহাটি গ্রামে প্রচারে গিয়েছিলেন মেমারির বিজেপি প্রার্থী ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য। কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করছিলেন। সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ বিজেপির। বিজেপির দুই কর্মী আহত হন। এক বিজেপি কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুরো ঘটনার বিষয় জানিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও মেমারি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল দাবি করেন, “এই মিছিল করার কোনও অনুমতি ছিল না বিজেপির কাছে। স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়েই ওই এলাকায় মিছিল করে বিজেপি। তাই গ্রামের লোক বাধা দেয়। এরপর তৃণমূল কর্মীদের আক্রমণ করে বিজেপি। তাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তিন বছরের শিশুকেও মারধর করে বিজেপি কর্মীরা।” এমনকী পুলিশের উপরও হামলা হয় বলে অভিযোগ।

দেওয়ালে ব্যানার লাগানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাদনঘাট থানার বড়োঢেক এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিট, অশান্তির ঘটনায় তৃণমূলের এক কর্মী রক্তাক্ত হয়। যদিও বিজেপির দাবি তাদেরও কয়েকজন কমবেশি আহত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর উভয়পক্ষই নাদনঘাট থানায় যায়। বিকেলে তৃণমূল কর্মীরা ব্যানার লাগাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেইসময় বিজেপির কয়েকজন কর্মী কটূক্তি করে। সেই ঘটনায় প্রতিবাদ করতেই উভয়পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে মারপিট অশান্তির ঘটনা ঘটে। মণিরুল মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মীর কপাল ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন দলের অঞ্চল সভাপতি জয়দেব বারুই।অন্যদিকে বিজেপির মন্ডল সভাপতি সৌমেন রায় বলেন, “বিজেপি কর্মীর বাড়ির দেওয়ালে পোস্টার লাগাচ্ছিল তৃণমূলের কর্মীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই তৃণমূলের লোকজন অশান্তি তৈরি করে। আমাদের কয়েকজন আহত হন।” এছাড়াও মধ্য হাওড়া, বারাসতের ছোট জাগুলিয়া থেকে অশান্তির খবর মিলেছে।

[আরও পড়ুন : তৃতীয় দফা ভোটের আগে ফের রাজ্য পুলিশে একাধিক রদবদল কমিশনের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার