সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে প্রথম দফা নির্বাচনের দিন ভাইরাল হওয়া ফোন কলের রেকর্ড উসকে দিয়েছিল নয়া জল্পনা। শুরু হয়েছিল নতুন এক রাজনৈতিক তরজা। ফোনের দু’প্রান্তে কথোপকথন চলছিল এমন দুই ব্যক্তির মধ্যে, যার একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আরেকদিকে ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি প্রলয় পাল। আর তাতেই সেই অডিও রেকর্ডিং নিয়ে তরজা তুঙ্গে ওঠে। মঙ্গলবার, নন্দীগ্রাম (Nandigram) অর্থাৎ রাজ্যের হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে ভোটের শেষ প্রচারের দিন এ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, কী কারণে বিজেপি নেতাকে ফোন করেছিলেন। জানালেন, তাঁর কাছে খবর ছিল যে প্রলয়বাবু নিজেই তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান, তাই ফোন করেছিলেন।
শনিবার প্রকাশ্যে আসা অডিওটিতে শোনা গিয়েছে, ‘তৃণমূল নেত্রী’ বিজেপি (BJP) নেতাকে ভোটে সাহায্যের কথা বলছেন। অডিওর সত্যতা স্বীকার করে নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জানিয়ে দেয়, দলের পুরনো কর্মীকে ফিরে আসার জন্য ফোন করতেই পারেন দলনেত্রী। এ নিয়ে জলঘোলা করার কিছু নেই। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি প্রলয় পাল নিজেই তাঁর সঙ্গে মমতার কথোপকথনের রেকর্ডটি প্রকাশ্যে আনেন। যেখানে ‘তৃণমূল নেত্রী’কে প্রলয়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে শোনা যায়। ‘তৃণমূল নেত্রী’কে বলতে শোনা গিয়েছে, প্রলয় যাতে এবারের নির্বাচনে তৃণমূলকে সাহায্য করে। মমতার কাছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন প্রলয়। জানিয়ে দেন, যে দল তিনি করছেন তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না। তাই তৃণমূলে ফিরবেন না। এরপরই তাঁকে সিদ্ধান্ত ভেবে দেখার প্রস্তাব দেন নেত্রী। কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি।
[আরও পড়ুন: ‘আর কোনও বহিরাগতকে ঢুকতে দেবেন না’, নন্দীগ্রামে স্থানীয়দের সতর্ক করলেন মমতা]
এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়লেও নেত্রী নিজে কোনও মন্তব্যই করেননি। কিন্তু ঘটনার দিন তিনেক পর, তাঁর নিজের কেন্দ্রে প্রচারের শেষ দিন বিষয়টি খোলসা করলেন মমতা। টেঙ্গুয়া মোড়ে শেষ জনসভা থেকে জানালেন, ”আমি শুনেছিলাম, অনেকে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। তাই আমি ছেলেটিকে নিজেই ফোন করেছিলাম। আর কী খারাপ বলেছি? ওকে বলেছি, ভাল থেকো, সুস্থ থেকো আর একটু ভেবে দেখো নিজের সিদ্ধান্তের কথা। আমি প্রার্থী হিসেবে সবার কাছে ফোন করে ভোট চাইতে পারি। এটা নিয়ে এত বিতর্কের কী আছে?” নেত্রী যা-ই বলে থাকুন, গেরুয়া শিবির কিন্তু তাঁর এই ফোন করার ঘটনাকে সামনে এনে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তুলতে চেয়েছে, তা স্পষ্ট।