সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার বিজেপির (BJP) বুথ সভাপতি। ধৃতের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রচুর তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভোটের মুখে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে বজবজে (Budge Budge)। কী কারণে মজুত করা হয়েছিল বোমা? তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বজবজ থানায় ফোন করেন। তিনি জানান, বজবজের গোবরঝুড়ি খালের ধারে হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে একজন। তৃতীয় দফা ভোটের মুখে এই খবর পাওয়ামাত্রই বজবজ থানার পুলিশ সাদা পোশাকে হানা দেয় ওই এলাকায়। একটি ওয়ান শটার-সহ বিশ্বজিৎ পোল্লে নামে বিজেপির বুথ সভাপতিকে আটক করে। তাকে থানায় নিয়ে আসার পর জানা যায়, ওর বিরুদ্ধে বজবজ থানায় আগেও মামলা রয়েছে। বহুদনি পলাতক ছিল ওই ব্যক্তি। আগ্নেয়াস্ত্রটি তার কাছে কীভাবে এল, তা জানতে চায় পুলিশ। পুলিশের দাবি বিজেপি নেতা জানান, ভোটে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য প্রচুর বোমাও মজুত রাখা হয়েছে। এমনকী নিজের বাড়ির সামনেও পরীক্ষামূলকভাবে বোমা ফাটানোও হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘জয় নিশ্চিত, শুধু ইভিএমগুলো পাহারা দিন’, নন্দীগ্রামে কর্মীদের চাঙ্গা করে উত্তরবঙ্গ পাড়ি মমতার]
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিশ্বজিতের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বজবজ থানার আধিকারিকরা বুইতার দাসপাড়া সংলগ্ন পুরনো তারা মা মন্দিরের পিছনের জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হয়। জঙ্গলের ভিতরে দু’টি ব্যাগ থেকে ২১ টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়। এই বিপুল পরিমাণ তাজা বোমা থানায় নিয়ে আসার ঝুঁকি থাকায় ঘটনাস্থলেই বম্বস্কোয়াড ও দমকলকে ডেকে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়। শুক্রবার বিশ্বজিৎকে অস্ত্রআইন ও বিস্ফোরক আইনে গ্রেপ্তার করে আলিপুর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বিজেপির জেলা নেতা সুফল ঘাঁটুর অভিযোগ, “বিশ্বজিৎ পোল্লে বুইতা অঞ্চলের ৪ নম্বর মণ্ডলে দলের বুথ সভাপতি। ভোটের আগে বিজেপিকে অপদস্থ করতেই তৃণমূল নিখুঁত পরিকল্পনা করে কর্মীদের ফাঁসাচ্ছে।”
অন্যদিকে এবিষয়ে বজবজ কেন্দ্রের তৃণমূলের (TMC) পর্যবেক্ষক জাহাঙ্গির খান বলেন, “দুষ্কৃতীদের দল বিজেপি। বিজেপির ওই নেতা বিশ্বজিৎ পোল্লেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ। ভোটে সন্ত্রাস করতেই বোমা মজুত করেছিলেন ওই বিজেপি নেতা। ওদের কাজই এলাকায় অশান্তি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করা। তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে লাভ হবে না।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি জেরার মুখে নিজেই ভোটে ব্যবহারের জন্য গোপন জায়গায় বোমা তৈরি করে মজুত রাখার কথা জানায়। পুলিশকে নিয়ে গিয়ে বোম উদ্ধারে সাহায্যও করে সে। পুরো ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট বজবজ কেন্দ্রে। ভোটের আগে অতগুলি বোমা উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল এলাকায়। এদিনে ভাঙড় থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪১ টি বোমা।