shono
Advertisement

শুভেন্দুর মতো এত খারাপ নয় মুকুল: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

টিকিট প্রসঙ্গে মমতাকে জবাব দিলেন দিলীপ ঘোষ।
Posted: 09:44 AM Mar 31, 2021Updated: 12:36 PM Mar 31, 2021

কিংশুক প্রামাণিক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো সৈনিকদের অনেকেই এখন অন্য শিবিরে। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, শিশির অধিকারী। দলত্যাগের পর থেকে অধিকারীদের বারবার তুলোধোনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে মুকুল রায়ের প্রতি তাঁর স্নেহ যে খানিকটা হলেও বর্তমান, তা মঙ্গলবার বুঝিয়ে দিলেন খোদ মমতা। নন্দীগ্রামে প্রচারের শেষ দিনে বললেন, “শুভেন্দুর মতো অত খারাপ না মুকুল। মুকুল বেচারা থাকে কাঁচরাপাড়ায়। তাঁকে টিকিট দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগর।” এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি মুকুলবাবুকে টিকিটই দেননি, আমরা তো তবু দিয়েছি। ক্ষমতা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী ওনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।”

Advertisement

মঙ্গলবার সকলের নজর ছিল নন্দীগ্রামে। একদিকে শুভেন্দু অধিকারীর প্রচারে অমিত শাহ, মিঠুন চক্রবর্তী, অন্য দিকে একাই একশো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাগযুদ্ধ, সঙ্গে তাল ঠোকাঠুকি। মমতার ছিল তিনটি সভা, দু’টি পদযাত্রা। বক্তৃতায় একটি বড় অংশে তিনি সন্ত্রাস, ভয় দেখানোর অভিযোগ আনলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। শুভেন্দু প্রসঙ্গে বললেন, “২০১৪ সাল থেকে গদ্দারি করছে। কেউটে সাপ। ভাগ্যিস, ভোটের আগে বিদায় নিয়েছে। না হলে ৪০ জন এমএলএ কিনে নিয়ে বলত, সরকার ভেঙে দেবে।” শাহকে উদ্দেশ করে এর পরই মমতা বলেন, “নিজের লোকেরা বিজেপিতে টিকিট পেল না। আমায় গাল দেয়। জয়প্রকাশ-সহ অনেককে দেয়নি। অথচ সিপিএমের হার্মাদ আর তৃণমূলের গদ্দাররা টিকিট পেয়েছে। অমিত শাহ ভুল খেললেন, নিজের লোকদের ঠকালেন। তৃণমূল ভাঙতে গিয়ে নিজের দলটা ভেঙে দিলেন। সব তো ধার করা। জেতার পরে থাকবে তো?”

তৃণমূলে মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে দূরত্ব ছিল রীতিমতো। মজার কথা এখন দু’জনেই বিজেপিতে। আগের দিন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মুকুলকে সাক্ষী মেনেছিলেন মমতা। এদিন বলেন, “মুকুল বেচারা থাকে কাঁচরাপাড়ায়। তাঁকে টিকিট দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগর। তবে আমি বলব মুকুল শুভেন্দুর মতো অত খারাপ নয়। ওরা ভাল থাকুক, সুখে থাকুক। আবার আসবে বলে ১৫ জন লাইন দিয়েছে। ভোটে ভাল করে কাজ করুক, তারপর দেখব। তবে যে গদ্দারি করেছে তাকে নেব না।” মমতা এদিনও অভিযোগ করেন, “গুন্ডামি করা হচ্ছে। হোম মিনিস্টার উসকানি দিচ্ছেন। গোটা দেশ থেকে নন্দীগ্রামে টাকা আসছে। হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগির চেষ্টা হচ্ছে। এটা নন্দীগ্রামের সংস্কৃতি নয়।” জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী মমতা কর্মীদের সংযত থাকতে বলেন।

[আরও পড়ুন: ‘ভোটে না লড়েও কেউ হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী’, জল্পনা উসকে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিলীপের]

টেঙ্গুয়ার সভা শেষ করে বেরনোর পথে একটি ছেলে অভিযোগ করে তৃণমূল করলে তাঁকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সেই গ্রামে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিশনকে জানানো হয়। সেখানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বিজেপি কর্মীরা দিলেও মমতা পাত্তা দেননি। নন্দীগ্রামে এক প্রাক্তন কর্মীকে ফোন করা নিয়ে বিতর্কে জল ঢেলে বলেন, “আমি প্রার্থী। সবাইকে ফোন করতেই পারি। খবর ছিল কথা বলতে চায় তাই বলেছি। আমার কথা রেকর্ড করেছে আমি কী করব।” মমতা বলেন, “সিঙ্গুর থেকেও আমার দাঁড়ানোর ইচ্ছা ছিল। বেচারাম জানে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথবাবু আসন ছাড়তে রাজি হলেন না।”

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ ভাঙাবেড়া রক্তস্নাত হয়েছিল। তালপাটি খালের ধারে তৈরি হয়েছে শহিদবেদি। মঙ্গলবার সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয় মমতার শেষ প্রচার। হুইল চেয়ারে সোনাচূড়া এলেন। সঙ্গে জনতা। তারপর গড়চক্রবেড়িয়া, ভুতার মোড় হয়ে বাসুকিচক। শেষে টেঙ্গুয়াতে সমাবেশ। সভা শেষ করে ছুটলেন সন্ত্রস্ত গ্রামে। ছ’টা বাজতে প্রচার শেষ। সূর্য ডুবল নতুন সূর্যোদয়ের প্রতিশ্রুতি রেখে। আজ নন্দীগ্রাম থেকে কপ্টারে সভা করতে যাবেন হুগলি হাওড়ায়। উল্লেখযোগ্য হল সিঙ্গুর। নন্দীগ্রাম থেকে সিঙ্গুর ছুঁয়ে আবার নন্দীগ্রাম ফেরা। ভোট পাহারা দিয়ে ১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফিরবেন কলকাতা। তারপর শিলিগুড়ি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement