সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটগণনা শেষ হয়ে ফলপ্রকাশের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তারই মধ্যে ব্যাপক রাজনৈতিক সন্ত্রাস শুরু করেছে রাজ্যের ভাবী শাসকদল। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজনৈতিক হিংসায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় হারের পরদিনই জয়ী দলের বিরুদ্ধে পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিযোগ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ।
সোমবার মুরলীধর সেন লেনের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর অভিযোগ, ”ফের পুরোপুরি ক্ষমতায় আসার আগেই রাজ্যে এত সন্ত্রাস শুরু করেছে। পুলিশ এখানে নীরব দর্শক। প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে আবেদন করছি, এগুলো দেখুন, যথাযথ ব্যবস্থা নিন।” এই অভিযোগ নিয়ে বিজেপির (BJP) প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়। এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগে সরব হলেও দলের রাজ্য সভাপতির সুর ছিল অনেক নরম। বললেন, ”সরকার গড়ে মানুষের উন্নয়ন করতে চেয়েছিলাম। পারিনি। তবে যোগ্য বিরোধী হয়ে সরকারকে সঠিকপথে চালনা করার ভূমিকা নেব।”
[আরও পড়ুন: ‘নন্দীগ্রামে রিটার্নিং অফিসারকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে’, বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস মমতার]
রবিবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে রাজ্যে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল। আর মূল বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের মিলিত আসন ১, অর্থাৎ বিরোধিতার ন্যূনতম শক্তিটুকুও সংগ্রহ করতে পারেনি এই জোট। সে যাই হোক, যারা বাংলার শাসন ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখছিল, একশোরও কম আসন পেয়ে তাদের মূল বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করাটা মোটেই সুখকর নয়। রবিবার থেকেই তা বোঝা যাচ্ছিল। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা কার্যত মাথা নত করে ফেলেছিলেন। দিলীপ জোর দিয়েছিলেন আত্মসমীক্ষায়।
[আরও পড়ুন: মহামারী কালে ফের অমানবিক দৃশ্য কলকাতায়! ২০ ঘণ্টা পড়ে রইল করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ]
তবে সোমবার থেকেই ফের ভাবী শাসকদলের বিরুদ্ধে পুরনো অস্ত্রেই শান দিলেন দিলীপ ঘোষ তথা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপের অভিযোগ, ক্ষমতায় আবার পুরোদমে বসার আগেই রাজ্যে সন্ত্রাস শুরু করেছে তৃণমূল। তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়েই অভিযোগ তুললেন, গত ২৪ ঘণ্টায় তৃণমূলের হামলায় তাঁদের দলের ৫ জন কর্মী, সমর্থক খুন হয়েছেন। অর্থাৎ ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের রাজনীতির অভিযোগের হাতিয়ারেই শান দিল বিজেপি। আর পাশাপাশিই দিলীপ ঘোষ আদর্শ বিরোধী হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব পালনের কথা বলে বুঝিয়েও দিলেন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তাঁদের অস্ত্র হয়ে উঠবে।
এদিকে, রাজ্যের নানা প্রান্তে রাজনৈতিক হিংসার খবরে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট নিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতা পুলিশের সিপিকে ডেকে পাঠিয়েছেন। টুইটে নিজেই জানালেন এ কথা।