সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি বলছেন, ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে চান। তৃণমূল বলছে, তাঁর এই সফর রাজনৈতিক। দিল্লির শাহেনশাদের ইশারায় বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হিংসায় ইন্ধন দিচ্ছেন রাজ্যপাল। উদ্দেশ্য বা কারণ যাই হোক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের জেলা সফর নিয়ে এই মুহূর্তে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। গতকালের কোচবিহার সফরের পর আজ দ্বিতীয় পর্যায়ে নন্দীগ্রামে গিয়েও রাজ্য সরকারকে তীব্র সুরে বিঁধলেন জগদীপ ধনকড়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি চলছে। হিংসার আগ্নেয়গিরিতে বসে আছি আমরা।
রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে জেলা সফর শুরু করেছেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার দিনভর অশান্ত কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। শুক্রবার আবার তিনি গিয়েছিলেন অসমে। অসমের ধুবুড়ি জেলার আগমনিতে রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘শরণার্থী’ শিবিরে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল৷ তারপরই আজ তাঁর গন্তব্য ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রাম আসন। এদিন সকালেই বিএসএফের (BSF) কপ্টারে নন্দীগ্রামে পৌঁছন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান নন্দীগ্রামের নব নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তার পর শুভেন্দুর সঙ্গেই গাড়িতে চেপে ‘হিংসা কবলিত’ এলাকা পরিদর্শনে রওনা দেন তিনি। নন্দীগ্রাম বাজারে, বঙ্কিম মোড়, কেন্দামারিতে যান রাজ্যপাল। এলাকা পরিদর্শনের পর জানকীনাথ মন্দিরেও যান তিনি। ধনকড়ের টুইটারে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তাঁকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। নিজেদের অভিযোগ জানাতে রাজ্যপালকে ঘিরে ধরেছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় আরও কড়া রাজ্য, আগামী ১৪ দিন বন্ধ বাস, মেট্রো-সহ সব গণপরিবহণ]
এরপর নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই ধনকড় অভিযোগ করেন, ভোট মিটে গেলেও নন্দীগ্রামে হিংসা অব্যাহত। চলছে খুন, ধর্ষণ, লুট। রাজ্যবাসী হিংসার আগ্নেয়গিরির উপর বসে আছে। এক দিকে কোভিড, অন্য দিকে নজিরবিহীন ভাবে ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে চরম সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রাজ্য। ভোটের পরও এমন নজিরবিহীন হিংসার কথা কোনওদিন শোনেননি ধনকড়। তাঁর কথায়,”এই তাণ্ডব, এই উলঙ্গ নৃত্য, ইতিহাস ক্ষমা করবে না। শীতলকুচিতে আপনি দ্রুত পদক্ষেপ করলেন। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন। কিন্তু এখানকার লক্ষ লক্ষ মানুষের দিকে একবারও ফিরেও তাকাচ্ছেন না। ভারতের সংবিধানের একটা শক্তি আছে। সেই শক্তি প্রয়োগ করতে বাধ্য করবেন না। ” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যপালের অনুরোধ,”শাসকদলের কর্মীদের ভয়ে ত্রস্ত সাধারণ মানুষ। ভয়ে রয়েছে পুলিশও। অবর্ণনীয় আতঙ্কে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, জরুরি পদক্ষেপ করুন এবং মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে দিন।”