মলয় কুণ্ডু: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন ‘এবার টার্গেট শিল্প’। সামাজিক কল্যাণের পর এবার কর্মসংস্থানে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্যপূরণ নিয়ে এদিন বৈঠকে বসেছিল রাজ্য ক্যাবিনেট। বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। রাজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান নিয়ে এদিনের বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সেই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
Advertisement
- শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এদিন বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উত্তর ২৪ পরগনা এবং মালদহ ডিভিশনের জন্য নতুন ৩১৭৯ টি প্রাথমিক শিক্ষক পদ তৈরি করা হল। পুরনো আরও ৩১২৫টি পদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
- বাংলায় শিল্প আনতে রাজ্য সরকারের তৎপরতা তুঙ্গে। তাই মাঝারি শিল্পতালুক তৈরির ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করল রাজ্য সরকার। ২০১৪ সালে এ নিয়ে নীতি তৈরি হয়েছে। তাতে বলা হয়েছিল, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা এবং কলকাতা পুরসভা এলাকায় বেশি জমি না থাকলে শিল্পতালুক তৈরি করা যাবে না। এবার সেই নিয়ম বদল করা হল। নয়া নিয়মে বলা হয়েছে, এই সমস্ত এলাকায় ৫ একর জমি থাকলেই তৈরি করা যাবে শিল্পতালুক।
[আরও পড়ুন: জনসংযোগে জোর, ভবানীপুরে ঘরোয়া আড্ডায় ‘ঘরের মেয়ে’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
- এতদিন পর্যন্ত সেই শিল্পতালুকে গুদাম বা লজিস্টিক হাব, কোল্ড স্টোরেজ, পোলট্রি বা ফিশারি তৈরি করা যেত না। এবার সেই শিল্পতালুকে এগুলিও তৈরি করা যাবে। ফলে মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছে রাজ্য সরকার।
- এতদিন সুনির্দিষ্ট নিয়ম না মানলে শিল্পতালুকের প্রসার করা যেত না। এবার থেকে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা এবং কলকাতা পুরসভা এলাকায় তা ২ একর পর্যন্ত প্রসারণ ঘটানো যাবে। অন্যান্য জেলায় শিল্পতালুকের প্রসারণ করা যাবে ৫ একর পর্যন্ত।
- ইনসেনটিভ প্রক্রিয়ায় বদল করা হয়েছে। এতদিন গোটা শিল্পতালুক তৈরি হয়ে গেলে তার পর ইনসেনটিভ দিত রাজ্য। এবার থেকে কাজ শুরু হওয়ার পর ২০ শতাংশ টাকা দেবে রাজ্য সরকার। তার পর ৩০ শতাংশ এবং পরে ৫০ শতাংশ টাকা দেবে রাজ্য।
- পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতেও নয়া পদক্ষেপ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বলা হয়েছে, পর্যটনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিযুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট ব্যবস্থা করছে সরকার। যাতে তাঁদের মানোন্নয়ন হয়।
- ইটভাটা তৈরির চুক্তিতেও বদল করল রাজ্য। এবার থেকে ১.৫ মিটার মাটি খুঁড়ে ইটভাটার তৈরি করতে পরিবেশদপ্তরের ছাড়পত্র লাগবে না।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগে ফের সুখবর, চলতি সপ্তাহ থেকে বাড়ছে মেট্রোর সংখ্যা]
- বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরির নিয়মেও বদল এল। এতদিন ডাক্তারি পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দিতে হলে মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে ৩০০ শয্যার হাসপাতাল থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। নয়া নিয়মে বলা হয়েছে, ৩০০ শয্যার হাসপাতাল না থাকলে সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা যাবে। হাতেকলমে কাজ শেখার জন্য পড়ুয়াদের নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো যেতে পারে।
- এতদিন ৩ বছরের জন্য এই চুক্তি হত। তার পর সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজকে ইউজার ফি দিতে হত। এবার ৫ বছর পর্যন্ত কোনও টাকা দিতে হবে না।
- নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। এতদিন তাদের ন্যূনতম ১০০ শয্যার হাসপাতাল থাকা বাধ্যতমূলক ছিল। এবার তারাও সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির পথে হাঁটতে পারবে। ফলে রাজ্যে ডাক্তার এবং নার্স তৈরি আরও সহজ হবে।