সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবারও চরমে রাজ্যপাল-রাজ্য সরকারের সংঘাত। রাজভবনের সামনে বিক্ষোভের ঘটনায় এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও কলকাতা পুলিশের উপস্থিতিতে কীভাবে রাজভবনের সামনে অশান্তি হয়, পুলিশ কমিশনারের কাছে সেই জবাবও তলব করলেন তিনি।
নারদ মামলা নিয়ে গত সোমবার থেকে সরগরম রাজ্য।ওইদিন সাতসকালে চেতলার বাড়ি থেকে ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তারপর একে একে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন তৃণমূল ও বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। গ্রেপ্তারির পর থেকেই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। সদ্যই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসেছে ঘাসফুল শিবির। মুথ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। পরাজয় মেনে নিতে না পেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফিরহাদ, মদন, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়দের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেই অভিযোগ শাসকদলের। আর এই গ্রেপ্তারির ফলে আরও একবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধেও বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগও উঠেছে। সেই ক্ষোভ থেকে নিজাম প্যালেসের পাশাপাশি ওইদিন রাজভবনের সামনেও বিক্ষোভ দেখান অগণিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। মঙ্গলবার আবার এক ব্যক্তি ভেড়ার পাল নিয়ে রাজভবনের সামনে অভিনব প্রতিবাদ দেখান।
[আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব রাজ্যের, পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের]
পরপর দু’দিনের এহেন বিক্ষোভ বেশ বিরক্ত রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। বুধবার সকালে টুইটে এই ঘটনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাজ্যপালের বাসভবন লাগোয়া এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা। তা সত্ত্বেও কীভাবে কলকাতা পুলিশের উপস্থিতিতে এমন কাণ্ড ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ধনকড়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জবাবও তলব করেন তিনি।
রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বাংলার প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার সংঘাতে জড়িয়েছেন জগদীপ ধনকড়। কখনও রাজ্য প্রশাসনকে না জানিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শন করছেন তো কখনও টুইট খোঁচা লেগেই রয়েছে। আর এবার নারদ মামলা নিয়েও দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব বাড়ল কয়েকগুণ। সবমিলিয়ে তৃতীয়বার মমতা সরকারের শপথের পর রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার সংঘাত যে অন্যরকম উচ্চতায় পৌঁছেছে তা বলাই যায়।