অভিরূপ দাস: কোভিড (COVID-19) আবহে বেসরকারি হাসপাতালে লাগামছাড়া খরচে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। সোমবার থেকে রাজ্যের তিনটি হাসপাতাল আর করোনা (Corona Virus) রোগী ভরতি নিতে পারবে না। এমনটাই নির্দেশ কমিশনের।
রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বেহালার অ্যাপেক্স হাসপাতাল, পার্ক সার্কাসের গুড সামারিটান হাসপাতাল এবং নিউটাউনের উজ্জীবন হাসপাতালে কোভিড রোগীদের ভরতির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কারণ এই তিন হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিমারী (Pandemic) পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত বিল করার অভিযোগ আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন হাসপাতালের বিরুদ্ধে বহুবার স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) কার্ড না নেওয়ার অভিযোগও আছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বতপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে কমিশন। আর তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অসীমবাবু জানান, সোমবার থেকেই এই আদেশ মানতে হবে অভিযুক্ত হাসপাতালগুলিকে। গত এক মাসে এই তিন হাসপাতালে কতজন কোভিড রোগী ভরতি হয়েছে? তাঁদের কত টাকা বিল হয়েছে? কেন সেই বিল করা হয়েছে? সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর উপযুক্ত তথ্য এবং প্রমাণ-সহ চাওয়া হয়েছে। তা খতিয়ে দেখবে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। সমস্ত কিছু দেখার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: ‘সংযত থাকুন, কোনও বিধিভঙ্গ করবেন না’, তৃণমূল কর্মীদের বার্তা অভিষেকের]
উল্লেখ্য, কোভিড চিকিৎসায় পিপিই ছাড়াও দৈনন্দিন ডাক্তারের ফিজ বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে বলা হয়েছিল, PPE-সহ রোগীর অন্য সুরক্ষা বাবদ দৈনিক সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা নেওয়া যাবে। চিকিৎসকের ফি বাবদ খরচ দৈনিক খরচ হবে ১০০০ টাকা। এছাড়াও –
- কোভিডের আগে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালের বেড ভাড়া যা ছিল, সেই ভাড়াই নিতে হবে। তবে বেড ভাড়া প্রতিদিন ১০০০ টাকার বেশি নিতে পারবে না হাসপাতালগুলি।
- ক্রিটিকাল কেয়ারের জন্য একাধিকবার চিকিৎসককে যেতে হলেও তার জন্য অতিরিক্ত ১০০০ টাকা নেওয়া যাবে।
- রোগীর ওষুধ, তুলো সমস্ত কিছুর জন্য হাসপাতালকে ১০ শতাংশ ছাড় দিতে হবে।
- প্রত্যেক হাসপাতালের সামনে তার খরচের সমস্ত তালিকা, বেড ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ডিসপ্লে বোর্ডে লাগিয়ে রাখতে হবে। তাও আবার একাধিক জায়গায়, যাতে সহজে চোখে পড়ে।
তবে এরপরও অতিরিক্ত বিল নেওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে। এর আগেও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে এনিয়ে সতর্ক করেছিল কমিশন। তবে কিছুতেই ফল হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। সেই কারণেই সোমবার কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশনের আশা, এতে বাকিরাও সতর্ক হবে।