চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পাশে পাননি স্বামীকে। জেলবন্দি স্বামী অন্যের মাধ্যমে খবর পেয়ে জানিয়েছিলেন, তৃণমূলের (TMC) বিরোধিতা করা স্ত্রীর এই কাজে সমর্থন নেই তাঁর। অনুরোধ করবেন, মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে। দেখা গেল, স্বামীর অনুরোধ মেনে নিয়েছেন স্ত্রী। মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) স্ত্রী টগরী। কিন্তু তারপর থেকেই খোঁজ নেই তাঁর। এনিয়ে জেলায় শুরু হয়েছে জল্পনা।
কেউ বলছেন, টগরী দেবী কলকাতায় রয়েছেন স্বামীর মুক্তির অপেক্ষায়। আবার কারও দাবি, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে তিনি গিয়েছেন পুরী (Puri), জগন্নাথদেবের কাছে পুজো দিতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই টগরী সাহা নির্দল প্রার্থী হয়ে বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির ১১ নম্বর আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। ভেবেছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির ওই আসনে দাঁড়ালে শাসকদল তাঁকে টিকিট দেবে। যদিও মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও উত্তর দেননি। এমনকী স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকেও কোনও আমল দেননি। তবে সেদিন তাঁর পাশে ছিলেন বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি রবীন কুমার ঘোষ। তিনি সেদিন জানিয়েছিলেন টগরী সাহা নির্দল (Independent) হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করছেন। আগামী দিনে দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে টিকিটের ব্যবস্থা করা হবে।
[আরও পড়ুন: অভাবের সঙ্গে যুদ্ধে জয়! ন্যাশনাল গেমসে সোনা জয় হুগলির নূপুরের]
কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশ কোনও নির্দল প্রার্থীকে দল সমর্থন করবে না। এর পরেই শাসকদলের টিকিট না পেয়ে ২০ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন টগরী সাহা। তবে তারপর তিনি কোথায় রয়েছেন, তার কোনও খোঁজ নেই। আন্দির বাড়ির গেটে রয়েছে তালা বন্ধ। প্রতিবেশীরা জানেন না টগরী সাহা কোথায়। বিধায়ক পত্নীকে নিয়ে এলাকায় জল্পনা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, “এখন আর বিধায়কের বাড়িতে তেমন আগের মতো গ্রামবাসীদের, রাজনৈতিক নেতাদের ভিড় থাকে না। আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে এই বাড়ির দরজা কাউকে খুলতে দেখিনি। টগরী সাহা সম্ভবত পরিবারের সদস্যদের সাথে রথযাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথ মহাপ্রভুর কাছে গেছেন পুজো দিতে।”
[আরও পড়ুন: ‘কথা শোনো, বিয়ে করো’, বিরোধীদের সাংবাদিক সম্মেলনেই রাহুলকে গাঁটছড়া বাঁধার পরামর্শ লালুর]
তবে বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি রবীন কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, “আমরা ইতিমধ্যেই গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির জেলা পরিষদ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের প্রচার শুরু করেছি। টগর সাহা শেষ পর্যন্ত শাসকদলের বি ফার্ম (প্রার্থী চিহ্ন) না পেয়ে হতাশ হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ২০ জুন। আসলে উনি (টগরী সাহা) চেয়েছিলেন তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়তে। কিন্তু হয়নি। আমরা এখন ভোট নিয়ে ব্যস্ত। তবে টগর সাহার মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়ে বড়ঞা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আজাদ মল্লিক জানিয়েছেন, “আসলে তৃণমূল প্রথম থেকেই টগর সাহা কে নিয়ে আতঙ্কে ছিল। বড়ঞায় যেখানেই দাড়াক হার নিশ্চিত তৃণমূল বুঝেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” বড়ঞা পঞ্চায়েত সমতির ১১ নং আসনে এবার লড়াই হচ্ছে কংগ্রেস পম্পা অধিকারী ও তৃণমূলের প্রার্থী সুলতানা বেগম মধ্যে। নির্দল টগরী সাহা তুলে নিয়েছেন আর কোনও নির্দল নেই । বিজেপি ও অন্য দলের প্রার্থী নেই।