সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে গোলাপ ফুটলেও তার কাঁটা সেভাবে হয়তো বিঁধবে না। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’-এর (Cyclone Gulab) সরাসরি প্রভাব এড়াতে পারলেও রবিবার সাগরের পরবর্তী দুর্যোগ-বাণে দক্ষিণবঙ্গ ভালমতোই বিদ্ধ হবে বলে আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা। সাগরে ঘনীভূত ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপের রূপ নিলেই সোমবার রাতে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ (Heavy Rain) শুরু হয়ে যাবে উপকূলবর্তী জেলায়। আর মঙ্গল ও বুধবার নাগাড়ে বৃষ্টি চলতে পারে কলকাতা—সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোতেও। আর অনাগত সেই ঘূর্ণাবর্ত—নিম্নচাপের ধাক্কা সামলাতে প্রশাসনিকমহল ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে নেমেছে। নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
শনিবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সমস্ত জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিপর্যয় (Weather Update) মোকাবিলায় তাঁদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ল্যাম্পপোস্ট, ওভারহেডের তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তরকে। আগামী মাসের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত জরুরি পরিষেবায় যুক্ত সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘অপর্ণা ফিরে চলো’, স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরে পেতে শ্বশুরবাড়ির সামনে ব্যানার নিয়ে ধরনায় স্বামী]
রবিবার বিকেল নাগাদ ওড়িশার দক্ষিণে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরে কলিঙ্গপত্তনমের উপর দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করার কথা ‘গুলাব’-এর। তার প্রভাবে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজ্যে তার সরাসরি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। জারি হয়েছে হলুদ সর্তকতা। ঘূর্ণিঝড়ের এবারের নামকরণটি করেছে পাকিস্তান। এর অর্থ হল গোলাপফুল।
তবে আজকের ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব না পড়লেও বাংলাকে ভোগাবে পরের ঘূর্ণাবর্ত। সোমবার থেকেই দুই চব্বিশ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে। সোমবার উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার কথা। সেটি শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। মঙ্গলবার সেটি বাংলার উপকূল এলাকায় পৌঁছবে। তার প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। চলবে তার পরদিনও।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে আলিপুরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা গণেশ দাস জানান, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ রবিবার ওড়িশার দক্ষিণে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরে কলিঙ্গপত্তনমের উপর দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করবে। তার প্রভাব এ রাজ্যে তেমন একটা পড়বে না। বরং সোমবার তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হলে মঙ্গল ও বুধবার কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে।
[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: বাধা মারণ ভাইরাস, আড়ম্বরহীন রায়গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘বিদ্রোহী’ ক্লাবের পুজো]
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টির সঙ্গে উপকূলের জেলাগুলিতে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে।