সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল্পনা ছিলই। তাতে শিলমোহর দিয়ে বীরভূমের মুরারই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করল তৃণমূল কংগ্রেস। অনুব্রত (Anubrata Mandal) গড়ের এই কেন্দ্রে শাসকদলের হয়ে লড়বেন শিশু বিশেষজ্ঞ মোশারফ হোসেন। আগে মুরারইয়ের প্রার্থী হিসেবে বিদায়ী বিধায়ক আবদুর রহমানের নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু আবদুর সাহেব এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্ত। গত ২৬ মার্চ থেকে হাসপাতালে ভরতি তিনি। তাই প্রার্থী বদল জরুরি হয়ে পড়েছিল বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।
ঘটনাচক্রে এই মোশারফ হোসেনকে প্রার্থী করা নিয়ে আবার তৃণমূল ও কংগ্রেসের (Congress) মধ্যে দড়ি টানাটানি ছলছিল। মোশারফ প্রথমে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে ছুটির জন্য আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু গত বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ফোন পেয়ে মত বদলান তিনি। কংগ্রেস ছেড়ে সোজা তৃণমূলের প্রার্থী হতে রাজি হয়ে যান। মোশারফের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁকে ফোন করায়, তাঁর অনুরোধ তিনি ফেলতে পারেননি। তাই মুরারই থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
[আরও পড়ুন: হাওড়ার রোড শো’তে জনজোয়ারে ভাসলেন মমতা, চাঙ্গা তৃণমূলকর্মীরা]
প্রসঙ্গত, মুরারই (Murarai) কেন্দ্রটি কংগ্রেস ও তৃণমূলের কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কেন্দ্র। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী আলি খান তৃণমূলের আবদুর রহমানের কাছে মাত্র ২৮০ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। পরে আলি খান তৃণমুলে যোগ দেন। এবারে আলি খানকে বাদ দিয়ে আবদুর রহমানকে প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তৃণমূলের একাংশের ক্ষোভ ছিল সেটা নিয়ে। অন্যদিকে কংগ্রেস আশিফ ইকবালকে প্রার্থী করে। তিনি দেওয়াল লিখন থেকে প্রচার শুরু করে দেন। কিন্তু তাঁকে ঘিরে অসন্তোষ দেখা যায় হাত শিবিরেও। কার্যালয়ে তালা মেরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তখন প্রদেশ কংগ্রেসের উদ্যোগে মোশারফ সাহেব কংগ্রেসের প্রার্থী হতে চেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরে ছুটি চান। কিন্তু এরপরই আসরে নামেন মমতা। মোশারফকে ফোন করে তাঁকে তৃণমূলের টিকিটে লড়তে বলেন তিনি। মমতার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলায় হার নিশ্চিত জেনেই বারাণসীর পথে মমতা’, বেনজির কটাক্ষ মোদির]
আসলে মোশারফ হোসেন মুরারইয়ের প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মোতাহার হোসেনের ছেলে। যিনি কংগ্রেস আমলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। চারবার বিধায়ক হিসাবে এলাকায় উন্নয়নে কাজ করেছেন। তাঁর বাবার পরিচিতি মুরারই এলাকায় মিথ হয়ে আছে। সেটাই কাজে লাগাতে চাইছে শাসকদল।