সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সকাল থেকেই নন্দীগ্রামের এপ্রান্ত থেকে অপ্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কমবেশি সক্রিয় দেখাচ্ছে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কেও। কিন্তু সকাল থেকে তাঁর দেখা মেলেনি। ভোট পরিদর্শনে তো বেরোননি, দুপুর একটা পর্যন্ত নিজের রেয়াপাড়ার বাড়ির বাইরেও পা রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গোটা সকাল কার্যত ঘরে বসেই ভোট পরিচালনা করছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার পক্ষে এ ছবি অবশ্য নতুন কিছু নয়। সাধারণত ভোটের দিন বেশিরভাগ সময় বাড়িতে বসে নজরদারি চালাতেই স্বচ্ছন্দ তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিন সাতসকালেই নন্দনায়েকবাড়ের বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে এসেছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। ভোট দেওয়ার পর প্রতিপক্ষ মমতার উদ্দেশে একের পর তির্যক মন্তব্যও করতে শোনা গিয়েছে শুভেন্দুকে। কখনও দাবি করেছেন, নন্দীগ্রামের (Nandigram) সব বুথে এজেন্ট নেই তৃণমূলের। কখনও মমতাকে বলেছেন ‘আন্টি’। আবার কখনও দাবি করতে শোনা গিয়েছে,”ভোটে বেগম হারছে। উন্নয়ন জিতবে, শোষণ হারবে। সুফিয়ান মডেল ফেল। ৩০ আসনে একটাও জিতবে না তৃণমূল।” কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন একের পর তির্যক আক্রমণ করে চলেছেন। তখনও কার্যত ‘নীরব’ মমতা। দুপুর একটা পর্যন্ত একবারও জনসমক্ষে দেখা যায়নি তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের খবর বাইরে না বেরলেও সকাল থেকে ভোটের প্রতিটি মুহূর্তে নজর রেখেছেন তিনি। রেয়াপাড়ায় নিজের ভাড়াবাড়িতে বসেই কার্যত ভোট পরিচালনা করছেন তিনি। বুথে বুথে তৃণমূল কর্মীদের যা যা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা সেসব পালন করছেন কিনা, কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা, সবটা ঘরে বসে ফোনের মাধ্যমেই নজরে রেখেছেন তৃণমূল (TMC) নেত্রী। দলের কর্মীদের যা যা নির্দেশ দেওয়ার দিয়েছেন রেয়াপাড়ার ঘরে বসেই। সূত্রের খবর, বেশ ভাল মুডেই আছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর একটার পর প্রথমবার বুথের বাইরে বেরতে দেখা যায় তাঁকে। শোনা যাচ্ছে, সোনাচুড়া, বয়াল, গোকুলনগরে বুথ পরিদর্শন করবেন তিনি। মমতার আরও একটি সিদ্ধান্ত চমকপ্রদ। আগে ঠিক ছিল, আজ ভোট মিটলে সন্ধেবেলায় কলকাতা ফিরবেন তিনি। সেই মতো কর্মসূচিও সাজানো রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আজ নন্দীগ্রামেই থাকবেন। ইভিএম স্ট্রংরুমে না যাওয়া পর্যন্ত নন্দীগ্রাম ছাড়তে চান না তিনি। আসলে ভোটের পরও দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চান মমতা।
[আরও পড়ুন: বিজেপিকে ভোট দিতে বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী! বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থীর, উত্তেজনা খড়গপুরে]
যদিও, ভোটের দিন মমতার এই নীরব থাকার ঘটনা একেবারেই নতুন কিছু নয়। ভোটের দিন সাধারণত বাড়িতেই কাটান মুখ্যমন্ত্রী। ভোট পরিচালনা করেন ফোনে ফোনেই। সেই সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে টেলিভিশনের মাধ্যমে ভোটের খবর রাখেন। মমতার তুলনায় বরং কিছুটা ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। সকালেই একবার নন্দীগ্রাম থানায় গিয়ে একপ্রস্থ অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। ২-১টি জায়গা থেকে এজেন্টদের ভয় দেখানোর অভিযোগ এসেছিল, সেসবও খতিয়ে দেখেছেন। সুফিয়ান জানিয়েছেন, নন্দীগ্রামের ৭ নম্বর বুথে তাঁদের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। এই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাবেন তারা। সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত নন্দীগ্রামের মোট ১১টি বুথে এজেন্টদের ভয় দেখানো এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তবে, আগের দফায় যেভাবে তেড়েফুঁড়ে কমিশনের কাছে সাংসদদের বড় দল গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে নালিশ জানিয়ে এসেছিল, এবার তেমনটা দেখা যায়নি।