সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুপোলি পর্দার নায়িকা বলে বাস্তবের মাটিতে পা পড়বে না, এমন কখনওই ছিল না। বরং সিনেমার জগত সামলে দিদির একান্ত অনুগামী হয়ে যখন তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন, তখন থেকেই তিনি মাটির মানুষ। দলের প্রয়োজনে যখন যেখানে প্রয়োজন, ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ঘরের মেয়ে হয়ে। জনতার মাঝে গিয়ে তাঁদের সমস্যা, অসুবিধার কথা মন দিয়ে শুনে লিপিবদ্ধ করেছেন, যে অভ্যাস এখন বিগতপ্রায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে বাঁকুড়ার মতো কঠিন আসনে প্রার্থী করেছিলেন তৃণমূল (TMC) নেত্রী। সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও বরানগরে 'হিরোগিরি'ই দেখালেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাপস রায়ের ছেড়ে আসা আসনে উপনির্বাচনে (WB By-Elections) জিতলেন তৃণমূলের 'নায়িকা'। ভোটের আগে থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত শোরগোল ফেলা সজল ঘোষ ফের হার স্বীকার করলেন।
সকাল থেকে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক পদ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাপস রায় (Tapas Roy)। এই নির্বাচনে তিনি কলকাতা উত্তরের পদ্মপ্রার্থীও হয়েছিলেন। আর সেই কারণে তাঁর ছেড়ে আসা শূন্য পদে উপনির্বাচন। ১ জুন, রাজ্যে সপ্তম দফার ভোটের দিনই বরানগরে (Baranagar) উপনির্বাচন হয়েছে। এখানে ঘাসফুল শিবির আবারও সামনে এগিয়ে দিয়েছিল দলের তারকা নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Sayantika Banerjee)।যদিও সায়ন্তিকার এই জার্নি সহজ ছিল না। লোকসভা ভোটে শাসকদলের প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষোভ জমেছিল বিস্তর। একসময়ে দল ছেড়ে দেওয়ার বার্তাও দিয়েছিলেন। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব আসরে নেমে তা প্রশমন করে। বরানগরের ফাঁকা কেন্দ্রে সায়ন্তিকার লড়াইয়ের জমি প্রস্তুত করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
[আরও পড়ুন: ভোটে জিতেছে প্রিয় দল? উদরপূর্তির লম্বা ফিরিস্তি! গুচ্ছখানেক রেসিপি দেখে নিন]
প্রার্থী ঘোষণা হওয়া মাত্রই খাতা-পেন হাতে সায়ন্তিকা নেমে পড়েন বরানগরে। প্রতিদিন একটু একটু করে সেখানে জনসংযোগ বাড়ান। বরানগরবাসীর মন জিততে এলাকায় দলের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে, তাদের নির্দেশমতো পা ফেলেছেন। উলটোদিকের পদ্মশিবিরের প্রার্থী সজল ঘোষ (Sajal Ghosh) এবং ডাকাবুকো ইমেজই ধরে রেখেছেন। বিরোধী প্রার্থীকে ব্যক্তিগত কুৎসা করতেও ছাড়েননি। আর বামপ্রার্থী হয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। ১ জুন ভোটের দিন তন্ময়বাবুকে রীতিমতো হাতাহাতি করতে দেখা যায়। সজল ঘোষ বার বার ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলছিলেন। আর সকাল সায়ন্তিকা একবার ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছিলেন। বাকি দিনটা সেভাবে আর তাঁকে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার লোকসভা ভোটের ফলাফলের পাশাপাশি এই বিধানসভা কেন্দ্রের দিকেও নজর ছিল সকলের। গণনার শুরু থেকে বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ এগিয়ে থাকলেও, শেষে বাজিমাত করলেন সায়ন্তিকাই। সন্ধের পর জয় ঘোষণা করা হল তাঁকে। তৃতীয় স্থানে সিপিএম প্রার্থী।
[আরও পড়ুন: রাহুল-সোনিয়াকে শুভেচ্ছা, উদ্ধব-শরদদের সঙ্গে কথা, ভোটের ফলপ্রকাশের পরই সক্রিয় মমতা]
রাজ্যের আরও একটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ছিল, মুর্শিদবাদের ভগবানগোলা। সেখানে দুপুরেই দেখা গেল, তৃণমূল প্রার্থী, ভূমিপুত্র রিয়াত হোসেন সরকার জিতে গিয়েছেন ১৫ হাজারের বেশি ভোটে।