সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য ও রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেল। শুক্রবার সকালে বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে অসমে চলে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankar)। উদ্দেশ্য, বাংলার রাজনৈতিক হিংসায় ‘ঘরছাড়া’দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। এবং তাঁদের দ্রুত ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা। ধনকড়ের এই ‘শরণার্থী শিবির’ সফরের পরই নতুন করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপালের দাবি, পছন্দ মতো দলকে ভোট দেওয়ার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বিচারে আক্রান্ত হতে হচ্ছে বিরোধীদের। অথচ, পুলিশ প্রশাসন কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ। রাজ্যে বেলাগাম অরাজকতা চলছে। রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ। আর সহ্য করা যাচ্ছে না। শিলিগুড়ি থেকেই রাজ্য সরকারকে তোপ দেগেছেন ধনকড়।
রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে গতকাল থেকেই জেলা সফর শুরু করেছেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার দিনভর অশান্ত কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছেন জগদীপ ধনকড়। তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের কথা মনে করিয়ে রাজ্যবাসীর সুরক্ষা কতটা, তা সরেজমিনে দেখেছেন। তা নিয়ে ফ্যাসাদও হয়েছে বহু রকমের। বহু জায়গায় রাজ্যপালকে দেখানো হয়েছে কালো পতাকা। দেখানো হয়েছে বিক্ষোভও। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, বেছে বেছে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল। তৃণমূল কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন, অথচ তা নিয়ে মাথাব্যাথা তাঁর নেই। তবে সেসব সমালোচনায় রাজ্যপাল দমেননি। আজ সকালেই রওনা দিয়েছেন অসমে। আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে বিএসএফের (BSF) হেলিকপ্টারে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই সড়ক পথে অসমে যান রাজ্যপাল। অসমের ধুবুড়ি জেলার আগমনিতে যান তিনি। রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘শরণার্থী’ শিবিরে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ অভিযোগ, এই রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই আশ্রয় নিয়েছেন কোচবিহারের বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জ, ঝাউকুঠি এলাকার আক্রান্ত BJP কর্মীরা৷ ধনকড় তাঁদের দ্রুত ঘরে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকেই।
[আরও পড়ুন: ‘আক্রান্ত পরিবারগুলোর কথা শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি’, কোচবিহারে গিয়ে ব্যথিত রাজ্যপাল]
অসম থেকে ফিরেই রাজ্যপালের অভিযোগ, তাঁর সফরে কোচবিহারের জেলাশাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার কেউই কোনওরকম সহযোগিতা করেননি। তবে, অসম প্রশাসনের অনেক শীর্ষ আধিকারিকই উপস্থিত ছিলেন। রাজ্যপাল বলছেন, এই সময় মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, সহযোগিতা পূর্ণ এবং সাংবিধানিক পদক্ষেপ করুন। প্রতিশোধের ভাবনা থেকে দূরে থাকুন। একমাত্র তাতেই রাজ্যে গণতন্ত্র প্রস্ফুটিত হবে। আইনের শাসন চালু করুন এবং মানুষকে পরিষেবা দিন। এদিন শিলিগুড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে ধনকড় দাবি করেছেন, রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন একেবারে নিস্ক্রিয়। সকলেই জানে কারা হামলা চালাচ্ছে। কারা আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও ভয়ঙ্কর হবে পরিস্থিতি।