সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সারা বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম। রাত জেগে পড়াশোনা। বারবার একই পড়া অভ্যাস করা। কড়া রুটিনের মাঝেই বেজে গিয়েছিল পরীক্ষার ঘণ্টা। পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। তারপর দেশজুড়ে শুরু অদৃশ্য ভাইরাসের তাণ্ডব। তাই ফলপ্রকাশের জন্য রাজ্যের সমস্ত মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষার্থীদের মতো মেধাতালিকায় প্রথম অরিত্র পালকেও একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হয়। অসাধারণ ফল হবে, সে বিষয়ে কিছুটা হলেও নিশ্চিত ছিল ওই স্কুলছাত্র। তবে মেধাতালিকার প্রথমেই নিজের নাম শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারল না অরিত্র।
বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত। মা প্রাথমিক শিক্ষিকা। দম্পতির একমাত্র সন্তান অরিত্র। ছোট থেকে মেমারি বিদ্যাসাগর মেমোরিয়াল ইনস্টিটিশন ইউনিট ওয়ানের বেশ মেধাবী ছাত্র সে। রেজাল্টে যেমন প্রতি বছরই রেকর্ড গড়ত তেমনই উপস্থিতির হারেও। কোনওদিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকত না অরিত্র। তবে নেহাত স্কুলের প্রতি টান থেকে যে অরিত্র এমন করত তা নয়। স্পষ্ট ভাষায় মেধাবী ছাত্রের উত্তর, “বাবা বাড়িতে থাকেন না। মা স্কুলে চলে যান। একা থাকার ভয়েই রোজ স্কুলে যেতাম।”
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতিতে কীভাবে স্কুলে ভরতি হবে মাধ্যমিক উত্তীর্ণরা? কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী?]
ছোট থেকে বাবাকে কম সময়ই কাছে পেয়েছে অরিত্র। তাই মায়ের সঙ্গেই তার বেশি সখ্যতা। শিক্ষিকা মা ছেলের পড়াশোনার দেখভাল করেন। মাধ্যমিকের আগেও তিনি পড়াশোনা দেখিয়ে দিয়েছেন ছেলেকে। এছাড়াও একটি কোচিং ক্লাসেও যেত অরিত্র। নিজে বাড়িতে সন্ধে ৭টা থেকে রাত ১১টা আবার রাত ১১.৩০টা থেকে ১টা পর্যন্ত পড়াশোনা করত। কঠিন পরিশ্রমেরই যেন ফল মিলল। বুধবার যখন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ করছিলেন তখন তাঁর উৎসাহী দু’টি চোখ ছিল টিভির পর্দায়। মেধাতালিকার প্রথমেই ছেলের নাম শুনে আনন্দে ফেটে পড়েন বাবা-মা। তবে অরিত্র প্রথমে বুঝতে পারেনি তার নিজের কথা বলছেন পর্ষদ সভাপতি। পরে বুঝতে পারে সে। সাফল্যের আনন্দে চোখে জল চলে আসে তার। বেশ কিছুক্ষণ টিভির সামনে বসে কান্নাকাটিও করে।
আপতত অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছে সফল ছাত্র। এদিন তার সঙ্গে দেখা করেন স্বপন দেবনাথ। গবেষক হয়ে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন দেখছে অরিত্র।
[আরও পড়ুন: দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে FIR দায়ের দলেরই কর্মীর]
The post ‘আমার নাম বলছে?’, মাধ্যমিকের মেধাতালিকার প্রথমে নিজের নাম শুনে কেঁদে ভাসাল অরিত্র appeared first on Sangbad Pratidin.