অভিষেক চৌধুরী,কালনা: ডাক্তাররা নাকি ঈশ্বরের রূপ! কিন্তু ঈশ্বর কি এতটা অমানবিক হতে পারেন! স্রেফ সামান্য ক’টা টাকার জন্য রোগীকে ঠেলে দিতে পারেন মৃত্যুর মুখে! সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করতে পারেন মায়ের বয়সী বৃদ্ধাকে! অবিশ্বাস্য হলেও এটাই হয়েছে কালনায় (Kalna)। অভিযোগ, দাবিমতো পারিশ্রমিক দিতে না পারায় জ্যোতির্ময় দাস নামের এক চিকিৎসক বৃদ্ধার প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখেও তা কেটে দিয়েছেন! সময়মতো জরুরি ওষুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধা। ‘অমানবিক’ ওই সুচিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মালতী দেবনাথ নামের ওই বৃদ্ধা কালনার নান্দাই গ্রামের বাসিন্দা। বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে সামান্য রোজগারের আশায় মুম্বইয়ে কাজ করেন। পুত্রবধূ এবং নাতনিকে নিয়ে বেশ কষ্টেই দিন গুজরান হচ্ছিল তাঁর। বেশ কিছুদিন ধরেই মাথা ও ঘাড়ের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন মালতীদেবী। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রথমবার ওই অভিযুক্ত চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে যান। সেদিন জ্যোতির্ময় দাসের (Jyotirmay Das) ফি মিটিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষাও করান। তারপর ১৩ ফেব্রুয়ারি মালতী দেবীর রিপোর্ট দেখাতে ফের জ্যোতির্ময় দাসের চেম্বারে যান তাঁর এক প্রতিবেশী। জানা যায়, ওই বৃদ্ধা ব্রেন স্ট্রোক ও স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত। প্রথমে চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু ওষুধও লিখে দিয়েছিলেন কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক। কিন্তু এরপরই তিনি জানতে পারেন, মালতীদেবীর প্রতিবেশী তাঁর পারিশ্রমিকের টাকা আনেননি। অভিযোগ, এরপরই প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের নাম কেটে দেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।
[আরও পড়ুন: ‘রিগিং করতে হলে আমরাই করব’, ভোটের আগে হুঁশিয়ারি বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর]
চিকিৎসকের এই অমানবিকতায় হতবাক গোটা কালনা শহর। অমানবিক ওই চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তাঁর চেম্বারের সামনে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে জ্যোতির্ময় দাস আপাতত বেপাত্তা। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদেও জানানো হয়েছে অভিযোগ। এমন আচরণের জন্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা খতিয়ে দেখাছে প্রশাসন। এদিকে, সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় মালতীদেবীর অসুস্থতা আরও বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।