সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিল্পে এগিয়ে বাংলা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে ৪৭৭৪৬.৬২ কোটি টাকার বেসরকারি বিনিয়োগ এসেছে। তাছাড়া, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ২৩,৮৮০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি ২০২১-২২ সালের শেষ হওয়া প্রকল্পের চেয়ে ৯৫ শতাংশ বেশি।
অতি সম্প্রতি এমএসএমই এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল এবং কনফেডারেশন অফ অরগ্যানিক ফুড প্রোডিউসার্স অ্যান্ড মার্কেটিং এজেন্সি যৌথভাবে ‘বিনিয়োগ- পশ্চিমবঙ্গে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি সমীক্ষাপত্র প্রকাশ করেছে। সেখানেই এমএসএমই ইপিসি-র চেয়ারম্যান ডিএস রাওয়াত শুক্রবার এই সমীক্ষা রিপোর্টটি পেশ করতে গিয়ে বলেছেন, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের শেষে প্রকল্পের কাজ শেষ হতে চলা কয়েকটি বড় লগ্নিকে মাধ্যম করে বিনিয়োগ ও কাজ শেষের ক্ষেত্রে বড় বৃদ্ধি ঘটবে।
[আরও পড়ুন: ঋতুস্রাবের রক্ত পুজোয় ব্যবহার করেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা! পুলিশের দ্বারস্থ গৃহবধূ]
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সিএমআইই প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ৪৭৭৪৬.৬২ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা হয়। এর মধ্যে ১২২৪৭.২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্য সরকার ১০৫৩৬.৮১ কোটি টাকার প্রকল্প পুনরুদ্ধার করেছে। যেখানে ২০২০-২১ সালে ২২১৬৮.১৫ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা হয়েছিল এবং ৭৪১২.২২ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছিল। তা ছাড়া, রাজ্য সরকার ২৬৬০.৫৪ কোটি টাকার প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করেছিল।
২০২২-এর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএমআইই-র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলায় ছ’টি বড় প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে। এর প্রত্যেকটির বিনিয়োগ মূল্য ৫০০ কোটি টাকার বেশি। সব প্রকল্প মিলিয়ে বিনিয়োগ মূল্য ৪১৬০ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে। মোট ঘোষিত বিনিয়োগ প্রকল্পের ৬১.৬ শতাংশ। ২০২৩-এর মার্চ ত্রৈমাসিকে ১৭০০০ কোটি টাকার ১৮টি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: হোলিতে যৌন হেনস্তার শিকার! ভয়ে ভারত ছাড়লেন জাপানি তরুণী, গ্রেপ্তার এক নাবালক-সহ ৩]
এদিন, রাওয়াত বলেন, এমএসএমই বা ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের পরেই পশ্চিমবঙ্গের স্থান। এ রাজ্যে ৮৮.৮৯ লাখ এমএসএমই-তে ১৩৫.৫২ লাখ মানুষ কাজ করে। কাজেই রাজ্যে এই ক্ষেত্রটি কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে ৮৮.৪১ লাখ ক্ষুদ্র, ২৬ হাজার ছোট, ১ হাজার মাঝারি শিল্প রয়েছে।
সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিনিয়োগ-বন্ধু নীতি, কাঁচামালের সহজপ্রাপ্তি, সন্তোষজনক বিদ্যুৎ পরিষেবা, দক্ষ কর্মী, স্থিতিশীল সমাজ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই বাংলায় এমএসএমই-র দ্রুত বৃদ্ধি ঘটছে। যা শিল্পোন্নয়নের মৌলিক শর্ত। পাশাপাশি, বাংলা সফটওয়ার, বৈদ্যুতিন ক্ষেত্র এবং উদীয়মান তথ্যপ্রযুক্তি, বিপিও ইত্যাদি ক্ষেত্রেও দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলায় রফতানি বাণিজ্যও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১-২২ সালে ১০৩৫৯৯.৭৬ কোটি টাকার পণ্য বাংলা থেকে রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে পেট্রোলিয়াম ও অপরিশোধিত পণ্য ৩৪২৬.৮৪ কোটি টাকার, নন-পেট্রোলিয়াম পণ্য ১০০১৭২.৯২ কোটি টাকার, কৃষি ও সম্পর্কিত পণ্য ২৩৮১০.৬৫ কোটি টাকার, খনিজ ৫১১৮.১৮ কোটি টাকার, উৎপাদিত পণ্য ৭০৫৭২.৩৫ কোটি টাকার রফতানি হয়েছে।