সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের হয়ে লড়াই করার সাজা। দুই ব্রিটিশ ও মরক্কোর এক যোদ্ধাকে মৃত্যুদণ্ড দিল রুশ মদতপুষ্ট স্বঘোষিত রাষ্ট্র ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর)। এহেন পদক্ষেপকে যুদ্ধের নিয়মের পরিপন্থী বলে নিন্দায় সরব হয়েছে ইউক্রেন ও ব্রিটেন-সহ পশ্চিমের দেশগুলি।
রুশ সংবাদ সংস্থা ‘RIA Novosti’ সূত্রে খবর, ডোনেৎস্কের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আইডেন আসলিন, শন পিনার ও ব্রাহিম সাদউন। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও ভাড়াটে সৈন্য হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই ডোনেৎস্কের আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। তবে আগামী একমাসের মধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবেন দোষীরা। সেই আপিল খারিজ হলে ওই তিন যোদ্ধাকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড়াতে হতে পারে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে নামেনি ব্রিটিশ ফৌজ। ফলে ‘ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’-এর দাবি ধৃতরা ‘ভাড়াটে সৈন্য’ তাই যুদ্ধবন্দিদের অধিকার তারা পাবে না।
[আরও পড়ুন: কলম ছেড়ে ধরেছিল বন্দুক, আদালতে দোষী সাব্যস্ত আইএস জঙ্গি সেই মার্কিন শিক্ষিকা]
উল্লেখ্য, মারিওপোলে আত্মসমর্পণকারী ইউক্রেনীয় সেনাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিলেন ডোনেৎস্কের এক রুশপন্থী বিদ্রোহী নেতা। আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কারখানায় দীর্ঘ লড়াইয়ে পর যে ইউক্রেনীয় সেনারা হাতিয়ার ফেলে দিয়েছেন তাঁদের রেয়াত করা হবে না বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) রুশপন্থীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক অঞ্চলের স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের আইনমন্ত্রী ইউরি সিরোভাৎকো কয়েকদিন আগেই বলেন, “সব যুদ্ধবন্দিরা আমাদের এলাকায় রয়েছে। তারমধ্যে আজভস্টলের প্রায় আড়াই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছে। ওদের (আত্মসমর্পণকারী ইউক্রেনীয় সেনা) বিচার আদালত করবে। কিন্তু এহেন অপরাধের জন্য আমাদের এখানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।”
দোনবাস দখলে মরিয়া লড়াই শুরু করেছে রুশ ফৌজ। ইউক্রেনীয় বাহিনীর উপর লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে পুতিন বাহিনী। বৃহস্পতিবার নিজেকে রুশ সম্রাট পিতার দ্য গ্রেটের সঙ্গে তুলনা করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) বলেন, “ঐতিহাসিক ভাবে যে এলাকাগুলি রাশিয়ার ছিল তা ফের উদ্ধার করা হবে।”
এদিকে, ব্রিটিশ যোদ্ধাদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে রুশপন্থীদের তীব্র সমালোচনা করেছে ইউক্রেন ও ব্রিটেন। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওলেহ নিকোলেঙ্ক বলেন, “এহেন পদক্ষেপ আইন ও নৈতিকতার পরিপন্থী। বিচারের নামে প্রহসন করেছে ওরা।” তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত বিদেশি যোদ্ধারা ইউক্রেনের হয়ে লড়াই করছেন তাঁরা সকলেই ইউক্রেনীয় ফৌজের সদস্য। ফলে তাঁদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন মেনে যুদ্ধবন্দিদের মতো আচরণ হওয়া উচিত। ব্রিটিশ বিদেশ সচিব লিজ ট্রাসও এই সাজাকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে মন্তব্য করেন।