সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'ইলেক্টোরাল বন্ডের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ হলে বিরোধীরা মুখ লুকনোর জায়গা পাবে না,' বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ খণ্ডন করে এমনটাই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) অমিত শাহ (Amit Shah)। এ প্রসঙ্গে সংসদে নিজেদের 'সংখ্যা' তুলে ধরে সাফাই দিলেন তিনি। পাশাপাশি শাহের দাবি, 'ইলেক্টোরাল বন্ড ভারতীয় রাজনীতি থেকে কালো ধন (Black Money) হটানোর লক্ষ্যে আনা হয়েছে।'
ইলেক্টোরাল বন্ডকে (Electoral Bond) হাতিয়ার করে দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সংস্থাগুলির থেকে 'তোলাবাজি'র অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বন্ড থেকে রাজনৈতিক দলগুলি মোট যা আয় করেছে তার প্রায় ৪৭ শতাংশ গিয়েছে বিজেপির (BJP) দখলে। টাকার অঙ্কটা প্রায় ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা। কংগ্রেস (Congress) নির্বাচনী বন্ডে পেয়েছে মাত্র ১ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। যা বিজেপির চেয়ে কয়েকগুণ কম। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডের কনক্লেভে এই ইস্যুতে অমিত শাহ বলেন, 'একটা ধারণা তৈরি করা হচ্ছে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে ভারতীয় জনতা পার্টির অনেক লাভ হয়েছে।' এর পর অঙ্ক কষে অমিত শাহ বলেন, 'বিজেপি ৬ হাজার কোটি টাকার বন্ড পেয়েছে। সব মিলিয়ে ২০ হাজার কোটির বন্ড বিক্রি হয়েছে। তৃণমূল ১৬০০ কোটির বন্ড পেয়েছে, কংগ্রেস ১৪০০ কোটির বন্ড পেয়েছে, বিআরএস ১২০০ কোটির বন্ড পেয়েছে।'
[আরও পড়ুন: অসম, মেঘালয়ের পর উত্তরপ্রদেশেও প্রার্থী দিল তৃণমূল, লোকসভার লড়াইয়ে কে?]
এই ইস্যুতেই অমিত শাহ যুক্তি দিয়ে বলেন, 'দেশের ১৩ রাজ্যে আমরা ক্ষমতায় আছি। লোকসভায় আমাদের ৩০৩ জন সাংসদ, আমাদের সদস্য সংখ্যা ১১ কোটি। সেই অনুপাতে তৃণমূল যদি আমাদের মতো বড় দল হত, তবে ২০ হাজার কোটির বন্ড পেত। বিআরএস পেত ৪০ হাজার কোটির বন্ড আর কংগ্রেস পেত ৯ হাজার কোটির বন্ড। সেক্ষেত্রে ৩০৩ সাংসদের দল হয়ে আমরা ৬ হাজার কোটির বন্ড পেয়েছি, আর বাকিরা ২৪২ সাংসদের দল হয়ে পেয়েছে ১৪ হাজার কোটির বন্ড।' বিরোধীদের তোপ দেগে এর পর শাহ বলেন, 'যখন যাবতীয় হিসেব সামনে আসবে বিরোধীরা মুখ লুকনোর জায়গা পাবে না। আমরা তো কালো টাকা শেষ করতে বন্ড এনেছিলাম। বন্ড আসার আগে নির্বাচনী খরচ কোথা থেকে আসত? তাহলে কি সেটা কালো ধন ছিল? নাকি তার কোনও হিসেব ছিল?'
[আরও পড়ুন: বাংলায় কটি আসন পাবে বিজেপি? ‘আব কি বার’ হবে কি ৪০০ পার? কী বলছে সমীক্ষা]
তবে বন্ড বাবদ বিজেপির বিপুল আয় নিয়ে অমিত শাহ সাফাই দিলেও বিতর্ক কাটছে না কিছুতেই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দেখা যাচ্ছে, যে সব সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজর রয়েছে, সেই সংস্থাগুলি থেকেই সবচেয়ে বেশি টাকা বন্ড বাবদ পেয়েছে বিজেপি। দেখা গিয়েছে, ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’ সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে। গত বছর মে মাসেই এই সংস্থার মালিক লটারি কিং মার্টিন স্যান্টিয়াগোর ৪৫৭ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। উদাহরণ দিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগ, ভুয়ো, অস্তিত্বহীন কোম্পানির মাধ্যমে বহু অনুদান পেয়েছে বিজেপি। সব মিলিয়ে অমিত শাহ ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যুতে সংসদে বিজেপির 'সংখ্যা' তুলে ধরে সাফাই দিলেও বিতর্ক কাটছে না।