সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হয়েও হল না শাপমুক্তি! চিনে ফের দাপট দেখাতে শুরু করেছে করোনা ভাইরাস। সম্প্রতি ‘জিরো কোভিড নীতি’র অন্তর্গত লাগু কড়া বিধিনিষেধ খানিকটা শিথিল করেছে কমিউনিস্ট দেশটি। কিন্তু ওমিক্রন বিএফ-৭ স্ট্রেনের দাপটে ফের হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। এহেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। পাশাপাশি সংস্থার আশঙ্কা, করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করতে পারে বেজিং।
বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রিয়েসুস বলেন, “চিনে ফের করোনার প্রকোপ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আশা করছি, চিন এই সংক্রান্ত তথ্য দেবে এবং আমাদের সুপারিশগুলি পর্যালোচনা করে দেখবে। টিকাকরণ অভিযান আরও দ্রুত চালেতে চিনের পাশে থাকব আমরা।” বেজিংকে একহাত নিয়ে এদিন কোভিড সংক্রমণের উৎস সম্পর্কে অনেক তথ্যই এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি বলে জানান টেড্রস। প্রসঙ্গত, সে দেশের অতিমারী পরিস্থিতি সম্পর্কে খুব সামান্য তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে। ইউহানে চিনের সরকারি পরীক্ষাগারের নোভেল করোনা ভাইরাস (Corona Virus) তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠলেও চিন বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে।
[আরও পড়ুন: মার্কিন কংগ্রেসে যুদ্ধকালীন ভাষণ, চার্চিলকে মনে করালেন জেলেনস্কি]
গত কয়েকদিনে চিনে একই সঙ্গে যেমন বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, তেমনই বেড়েছে করোনায় মৃত্যুও। তবে বুধবার বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়, এদিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনও মৃত্যু হয়নি সে দেশে। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ‘সংজ্ঞা’ কিছুটা বদল করা হচ্ছে প্রশাসনিক স্তরে। সেই কারণেই বদল হচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। সে দেশের ভাইরোলজিস্টদের অভিমত, তিন মাসের মধ্যে দেশের ষাট শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে। কিন্তু বেজিং সিদ্ধান্ত নিয়েছে, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি যদি পুরনো কোনও শারীরিক সমস্যার কারণে মারা যান, তাঁর মৃত্যুকে কোনওভাবেই করোনায় মৃত্যু হিসাবে গণ্য করা হবে না।
চিনের এক নম্বর হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত পিকিং ইউনিভার্সিটি হসপিটালের প্রধান ভাইরোলজিস্ট ওয়াং গিকিয়াং জানিয়েছেন, করোনার কারণে ফুসফুসে সংক্রমণ এবং সেই সংক্রমণের কারণেই মৃত্যু হলে তাকে করোনা মৃত্যুর পরিসংখ্যানে যুক্ত করা যাবে। গত তিন বছরের বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুকে করোনা মৃত্যুর মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। এমনকী, করোনা আক্রান্ত যদি অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হয় সেই মৃত্যুকেও গত বছর করোনা মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি। এবার তার থেকে একটু উল্টো পথে হাঁটল বেজিং।