সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদভী হিদমা (Madvi Hidma)। নামটা এখনও তেমন পরিচিত নয়। গোয়েন্দাদের কাছে এই অখ্যাত মাথাটিরই দামই ৪০ লক্ষ টাকা। তাঁর হাতেই নাকি বদলেছে মাওহানার ঘরানা। যার প্রমাণ রবিবারের বিজাপুর হামলা (Chhattisgarh Naxal Ambush)। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বছর চল্লিশের হিদমার মাওবাদী হিসাবে হাতেখড়ি নয়ের দশকে, যখন সে নিছকই কিশোর। দিন যত গড়িয়েছে, গেরিলা বাহিনীর দক্ষ প্রশাসক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে এই মাওবাদী নেতা। তার হাতেই তৈরি হয়েছেন, সুকমা অঞ্চলের একাধিক গেরিলা নেতা। যার মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি।
গত কয়েক বছরে এই হিদমার হাতেই বদলেছে মাওবাদীদের রণকৌশল। ‘ট্যাক্টিক্যাল কাউন্টার অফেন্সিভ ক্যাম্পেন’। মাও অভিধানে যা ‘টিসিওসি’ নামেই পরিচিত। মাও-হামলায় এই ঘরানাই সুকমার জঙ্গলের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মাদভী হিদমা। এ হেন হিদমা সম্পর্কে গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। কিন্তু তাঁর টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি আধাসেনা। বিশেষ করে দ্রুত কৌশল বদলে পারদর্শী হিদমাকে ধরতে বারবার বেগ পেতে হয়েছে ছত্তিশগড় (Chhattisgarh) প্রশাসনকে। দণ্ডকারণ্য স্পেশ্যাল জোন কমিটির এই মাও নেতার বিরুদ্ধে আছে একাধিক খুনের অভিযোগও। যা নিয়ে তদন্ত করছে এনআইএ। ২১ জনের মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য এই মাদভী হিদমা।
[আরও পড়ুন: ১০০ কোটি টাকার তোলাবাজির অভিযোগ, পদত্যাগ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের]
গত ১০ দিন ধরেই গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল, বিজাপুরে লুকিয়ে রয়েছেন মাওবাদী এই শীর্ষ নেতা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে মাওবাদীরা বিজাপুরের জঙ্গলে যেভাবে লড়ল এবং যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, হিদমার তথ্য দিয়ে ফাঁদে ফেলা হয়েছে জওয়ানদের। জওয়ানরা পৌঁছনোর আগেই মাওবাদীদের একটি দল ওত পেতে বসে ছিল এবং দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল তারা। মাওবাদীরা এতটাই কাছে ছিল যে, এক জওয়ান বন্দুকের ম্যাগাজিন পরিবর্তন করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে এক মাওবাদী তাঁর সামনে চলে আসে। এটাই ‘টিসিওসি’। প্রথমেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে জওয়ানের হাত কেটে দেয়। তারপর শরীর লক্ষ্য করে গুলি চালায়। যেভাবে হিদমার সম্পর্কে নানাজন কিংবা প্রযুক্তির সাহায্যে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল তা যথেষ্ট বিরল। আর ওই নির্দিষ্ট জায়গাতেই মাওবাদীরা যে ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তা দেখে মনে হচ্ছে, এটা নিশ্চিত একটা ফাঁদই ছিল।