সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট দুর্নীতি কাণ্ডে শুরু থেকে উঠে আসছিল সঞ্জীব মুখিয়ার নাম। প্রশ্নফাঁসের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তাঁকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্ত শুরু হওয়ার পর গত ৬ মে থেকে নিখোঁজ অভিযুক্ত সঞ্জীব। তদন্তকারীদের তরফে জানা যাচ্ছে, অতীতে একাধিকবার প্রশ্নফাঁসে নাম উঠেছে তাঁর। এমনকি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। তার পরও শিক্ষা হয়নি, রীতিমতো গ্যাং তৈরি করে প্রশ্নফাঁসের কারবার চালাত অভিযুক্ত। এই গ্যাংয়ের নাম ছিল 'মুখিয়া সলভার গ্যাং'।
বিহার পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিহারের নালন্দা জেলার জেলার বাসিন্দা সঞ্জীবের আসল নাম সঞ্জীব সিং। তাঁর স্ত্রীর নাম মমতা। যিনি একটা সময় স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। ২০২০ সালে এলজেপির টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনেও লড়াই করেন, তবে হেরে যান। ফলে বিহারে যথেষ্ট রাজনৈতিক দাপট ছিল সঞ্জীবের। সেই প্রতিপত্তিকে হাতিয়ার করে দলবল তৈরি করে প্রশ্নফাঁসের কারবার শুরু করে অভিযুক্ত। শুধু সঞ্জীব নন, তার ছেলে শিবও কিছু কম যান না। পেশায় ডাক্তার হলেও একাধিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধেও। বিহার শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বর্তমানে জেলবন্দী শিব।
[আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ভালোবাসা দেখাচ্ছে!’ জরুরি অবস্থার ৪৯ বছরে কংগ্রেসকে নিশানা মোদির]
তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, এক অধ্যাপকের কাছ থেকে নিটের প্রশ্ন পেয়েছিল সঞ্জীব। সেই প্রশ্ন সে দেয় ভাগ্নে রকিকে। এর পর প্রশ্নপত্রের সঙ্গে উত্তরপত্র তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে মাঠে নামে অভিযুক্তরা। সূত্রের খবর, এই প্রশ্নপত্র পিছু প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, নিট পরীক্ষার একদিন আগে ডাক্তারি পড়ুয়াদের পাটনা ও রাঁচির লার্ন প্লে স্কুল অ্যান্ড বয়েজ হোস্টেলে নিয়ে আসে সঞ্জীব। সেখানে সকলের থাকার ব্যবস্থা করে সে। এর পর সেখানেই পড়ুয়াদের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিলি করা হয়।
[আরও পড়ুন: অতিশীর পাশে সাগরিকা-মহুয়ারা, AAP মন্ত্রীর অনশনে TMC প্রতিনিধি দল]
জানা গিয়েছে, বিহারের এক কৃষি কলেজের কর্মী ছিলেন অভিযুক্ত এই সঞ্জীব। সেখানে একইরকমভাবে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তাঁর নাম জড়ানোর পর সঞ্জীবকে বদলি করা হয়েছিল নালন্দা কলেজের নুরসরাই শাখায়। তবে কোনও পরিশ্রম ছাড়া বিপুল টাকা আয়ের সহজ রাস্তার লোভ ছাড়তে পারেনি অভিযুক্ত। ২০১৬ সালে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সঞ্জীবকে। তবে ছাড়া পাওয়ার পর দলবল তৈরি করে নতুনভাবে শুরু হয় তাঁর কারবার। যদিও নিট মামলার নিজের নাম ওঠার পর সঞ্জীবের দাবি ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।