সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘কালী’ (Kaai) তথ্যচিত্রের পোস্টার নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। ইতিমধ্যে পরিচালক লীনা মণিমেকলেইয়ের (Leena Manimekalai) বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ ও উত্তর প্রদেশের পুলিশ। অন্যদিকে বিতর্কিত পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। পক্ষে ও বিপক্ষে মুখে খুলেছেন আরও অনেকেই। পরিচালক লীনা জানিয়ে দিয়েছেন, বেঁচে থাকতে মত প্রকাশ থেকে সরে আসবেন না। প্রশ্ন হল কে এই লীনা মণিমেকলেই? ‘কালী’র বিতর্কিত পোস্টার খবরে আসার আগে তাঁকে তো চিনত না দেশ!
লীনা মাদুরাইয়ের (Madurai) মহারাজাপুরমের বাসিন্দা। বাবা অধ্যাপক। অল্প বয়সে তাঁর বিয়ের পরিকল্পনা করেছিল পরিবার। সেই সময় বাড়ি ছেড়ে চেন্নাই চলে যান জেদি তরুণী। একটি তামিল ম্যাগাজিনে কাজে যোগ দেন। ওই ম্যাগাজিনের মালিক অবশ্য লীনার ঘটনা জেনে তাঁকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। তবে এবার বিয়ে রুখে দিতে সক্ষম হন লীনা। ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভরতি হন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীনই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। পরিবারকে সাহায্য করতে আইটি ফার্মে যোগ দেন লীনা। তা ছেড়ে অন্য কাজও করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০২ সালে ছবি তৈরি করার স্বপ্ন সফল হয়। মুক্তি পায় ‘মহাত্মা’।
[আরও পড়ুন: ২১ দিনে সাতবার গোলযোগ স্পাইসজেটের বিমানে, ফের করতে হল জরুরি অবতরণ]
মহাত্মায় সমাজের অবহেলিত মানুষের কথা তুলে ধরেন লীনা। ছবিটি উচ্চ প্রশংসিত হয়। এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অন্তজ শ্রেণির জন্য কাজ করায় একাধিক ফেলোশিপ পান। তাঁর ছবি বহু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়। যদিও মহাত্মা নিয়ে চূড়ান্ত বিতর্কিও হয়। ২০০৪ সালের পরবর্তী ছবি। একজন দলিত মহিলার জীবন নিয়ে। সেই ছবিও বিতর্কিত। ২০১১ সালে ধনুশকোডির জেলেদের দুর্দশার উপর তথ্যচিত্র ‘সেনগাদল’ তৈরি করেন। সেই ছবি নিয়েও বিতর্ক দানা বাধে। কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ড আপত্তি তোলে। যদিও শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায় ছবিটি। এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়।
অর্থাৎ ‘কালী’ প্রথমবার নয়। আদতে লীনা মণিমেকলের ছবি মানেই বিতর্ক। যেহেতু তিনি মোটের উপর অপ্রিয় সত্যি ঘটনা অবলম্বনেই ছবি তৈরি করেন। একপক্ষের তা পছন্দ হলেও অন্য পক্ষের পছন্দ হয় না।
[আরও পড়ুন: জুটিতে লুটি, একসঙ্গে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান চালিয়ে ইতিহাস বাবা-মেয়ের]
প্রসঙ্গত, কালীর পোস্টারের কারণে লীনার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হলেও পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তেমনই তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন, শিব সেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। তিনি বলেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেবলমাত্র হিন্দু দেবদেবীদের জন্য সংরক্ষিত হতে পারে না, বাকিদেরও ধর্মীয় ভাবাবেগ রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ধর্ম কখনও কাউকে আক্রমণের হাতিয়ার হতে পারে না।” তবে লীনার ছবির পোস্টারে কালী ঠাকুরের মুখে সিগারেট, এই বিষয়টি প্রিয়াঙ্কারও পছন্দ হয়নি।