সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই নতুন সমস্যার মুখে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। একে তো বছর দেড়েকের লড়াইয়েও ইউক্রেনকে কাবু করা যায়নি। এর মধ্যেই মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। একাধিক রুশ শহরের দিকে এগোচ্ছে বিদ্রোহী সেনাদল। নিজের বাহিনীর প্রতি প্রিগোজিনের হুঙ্কার, ”আমাদের পথে যা আসবে তাকেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দাও।” এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের নজর রাশিয়ার (Russia) দিকে। সেই সঙ্গেই আলোচনায় উঠে আসছে প্রিগোজিনের নাম। প্রশ্ন উঠছে, কে এই প্রিগোজিন? যিনি পুতিনকে এমন খোলামেলা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন।
১৯৬১ সালে লেনিনগ্রাদে জন্ম প্রিগোজিনের (Yevgeny Prigozhin)। শৈশব ছিল বিপন্ন। চিলড্রেনস হোম ও কিশোর সংশোধনাগারে কেটেছে ছেলেবেলার অনেকটাই সময়। কেরিয়ার শুরু রাঁধুনি হিসেবেই। কিন্তু ক্রমেই তিনি হয়ে উঠতে থাকেন বিতর্কিত চরিত্র। ভাবতে অবাক লাগে, আজ যিনি পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, একদা তিনিই ছিলেন তাঁর এক বিশ্বস্ত সহচর। তাঁকে বলা হত ‘পুতিনের রাঁধুনি’। আসলে ক্রেমলিনে খাবার সরবরাহ করত প্রিগোজিনেরই রেস্তোরাঁ ও কেটারিং সংস্থা।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ‘সেনা অভ্যুত্থান’, পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ওয়াগনার বাহিনীর]
এই মুহূর্তে তিনি রুশ সরকারের মদতপুষ্ট সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপের মালিক। ওই সংস্থার পাশাপাশি আরও তিনটি সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি, যেগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল ২০১৬ ও ২০১৮ সালের মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাঁর উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নে ডাকাতি ও জালিয়াতির অভিযোগে ৯ বছর জেলে কাটালেও পরবর্তী সময়ে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকেন তিনি। ফলে একদিকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, অন্যদিকে রুশ প্রশাসনের অন্ধকার নানা দিক সম্পর্কে জেনে ফেলা। ধীরে ধীরে ওয়াগনার বাহিনীর সর্বেসর্বা হয়ে আজ প্রিগোজিন হয়ে উঠেছেন পুতিনের মস্ত মাথাব্যথার কারণ। সিরিয়া, লিবিয়া, ইউক্রেনে যুদ্ধ করেছে তাঁর ভাড়াটে সেনাবাহিনী। এবার সেই সেনাবাহিনীই দখল করতে চাইছে রাশিয়ার একের পর এক শহর। যাদের রুখতে মরিয়া পুতিন।