রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। ফলত শীঘ্রই নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করবে বিজেপি। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী সভাপতি কে হবেন? তা নিয়ে নানামহলে নানা মত। শোনা যাচ্ছে, চর্চায় উঠে এসেছে শমীক ভট্টাচার্য ও জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর নাম। শমীক বর্তমানে দলের রাজ্যসভার সাংসদ ও রাজ্য মুখপাত্র। অন্যদিকে, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও পুরুলিয়ার সাংসদ। রাজ্য সভাপতি হিসাবে প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষের নামও সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে বলেই খবর। নাম রয়েছে সাংসদ জগন্নাথ সরকারেরও।
দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে প্রথমে এগিয়ে থেকেও কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ ও জগন্নাথ সরকাররা। আবার মহিলা মুখ হিসাবে ঘোরাফেরা করছে লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পল থেকে দেবশ্রী চৌধুরীর নাম। নাম শোনা গিয়েছে দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়েরও। আবার দলের একাংশ বলছে, শেষমেশ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে। যদিও সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব কে সামলাবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, শুভেন্দু সফলভাবেই বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ফলে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের ছোঁয়া লাগবে না এরকম আবার নাম হচ্ছে শমীক ভট্টাচার্য। যিনি পার্টিতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, সুবক্তাও, পরিচিত মুখ। তাই শমীককে রাজ্য সভাপতি করার জন্য দিল্লির কাছে দলের বড় অংশ দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোও কোনও গোষ্ঠী করেন না। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তিনি জঙ্গলমহল থেকে পৌঁছেছেন সংসদে। বঙ্গ বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদকও। তা ছাড়া, সংঘের ঘনিষ্ঠ। তবে তিনি মিতভাষী। দলের কর্মসূচিতে মঞ্চে সঞ্চালনার জন্য বারে বারে তাঁর হাতেই মাইক তুলে দেন নেতৃত্ব। তবে আক্রমণ করতে গিয়ে কখনও শালীনতার সীমা ছড়িয়েছেন, এ অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে নেই। আদিবাসী-কুড়মি দ্বন্দ্বের মধ্যে পুরুলিয়ায় কঠিন লড়াই করে সংসদে গিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে জ্যোতির্ময় হঠাৎই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। গত দেড় মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিক চিঠি লিখে ফেলেছেন কেন্দ্রে। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম হঠাৎ করেই ভেসে উঠেছে। দলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, জ্যোতির্ময় একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল এবং সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁর সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই তাঁকে রাজ্য সভাপতির মতো গুরুদায়িত্ব নাও দিতে পারে দল। তবে সম্ভাব্য তালিকায় তিনি প্রথমদিকেই রয়েছেন। একাধিক নাম চর্চায় থাকলেও বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী সভাপতি কে হবেন তা ঠিক করবেন মোদি-শাহই। এদিকে, ২৪ অক্টোবর রাজ্যে আসার কথা অমিত শাহর। রাজ্য নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন তাঁরা।