সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ছয়মাস ধরে হামাস নিধনে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। ইতিমধ্যে সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। এবার রক্তাক্ত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেন পোপ ফ্রান্সিস। সেই সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দি ইজরায়েলের নাগরিকদের দ্রুত মুক্তির কথাও বলেছেন তিনি। রবিবার ইস্টার সানডে উপলক্ষে এক ভাষণে গাজায় ইজরায়ালি সেনার অভিযানের কথা শোনা যায় পোপ ফ্রান্সিসের গলায়। কেন এত মৃত্যু? কেন এত হানাহানি? প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই সঙ্গে দুবছর ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন লড়াইয়ে ইতি টানার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের অনুষ্ঠানে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “গত ৭ অক্টোবরে আটক ইজরায়েলি বন্দিদের দ্রুত মুক্তি ও গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি আমি। আমরা শিশুদের চোখে দুর্ভোগের ছায়া দেখছি। নিষ্পাপ শিশুরা হাসতে ভুলে গিয়েছে। শিশুরা তাদের চোখ দিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা করছে, কেন এত মৃত্যু? কেন এত সর্বনাশ? যুদ্ধ সবসময় একটি অযৌক্তিক ব্যাপার এবং এটা সবার জন্যই পরাজয়।” একদিকে গাজায় চলছে হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধ। অন্যদিকে দুবছর পেরিয়েও জারি রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী লড়াই। সেখানেও মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। এই সংঘাতও থামানোর কথা বলেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘সবরকম সাহায্য পেয়েছি’, পান্নুন খুনের ছকের তদন্তে ভারতকে দরাজ সার্টিফিকেট আমেরিকার]
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় গাজার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় বসেছিল ইজরায়েল ও হামাস। রবিবারও কায়রোয় ফের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পরিষ্কার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। তাই বাড়ছে প্রতীক্ষা। এখনও ইজরায়েলি ও বিদেশি মিলিয়ে গাজায় পণবন্দি অন্তত ১৩৪ জন। দ্রুত তাঁদের মুক্তির দাবি নিয়ে রবিবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার প্রতিবাদী। যাঁদের একটা বড় অংশই পণবন্দিদের আত্মীয়। তেল আভিভে রিং রোড অবরোধ করেন তাঁরা। জেরুজালেমেও শয়ে শয়ে প্রতিবাদী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান। নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনেও জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আন্দোলনকারীরা।
সকলেরই অভিযোগ, পণবন্দিদের দ্রুত মুক্ত না করতে পারাটা নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা। এক প্রতিবাদীর মন্তব্য, “আপনি (নেতানিয়াহু) যুদ্ধবিরতির চুক্তি হতে দিচ্ছেন না। আমাদের ও আমাদের প্রিয়জনদের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আপনিই।” অন্য আরেকজনের মন্তব্য, “আমরা দেখতে পাচ্ছি কীভাবে রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমাদের অপহৃত প্রিয়জনদের মুক্ত করতে তিনি কতটা চিন্তা করছেন তাও বোঝা যাচ্ছে।” গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। বাড়ছে মৃত্যু। চরম দুর্দশায় দিন কাটছে গাজার সাধারণের মানুষের। যা নিয়ে বারবার আন্তর্জাতিক মহলে চাপের মুখে পড়লেও হামাসকে নিঃশেষ করার লক্ষ্যে এখনও অবিচল নেতানিয়াহু।