সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দাবানলে পুড়ছে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) জঙ্গল অথচ আগুন নেভানোর বদলে বনকর্মীদের (Forest Worker) পাঠানো হয়েছে ভোটের ডিউটিতে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শীর্ষ আদালতের তোপের মুখে পড়ল উত্তরাখণ্ড সরকার। আদালতের তরফে প্রশ্ন তোলা হল, কেন আগুন নেভানোর পরিবর্তে বনকর্মীদের ভোটের ডিউটিতে পাঠানো হল?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জ্বলছে উত্তরাখণ্ডের জঙ্গল। একাধিক মৃত্যুর পাশাপাশি এই ঘটনায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুষের। অথচ এখনও পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি উত্তরাখণ্ড সরকার। এই ঘটনায় রাজ্যসরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। অভিযোগ ওঠে, বনকর্মীদের আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করার পরিবর্তে তাঁদের ভোটের ডিউটিতে পাঠিয়েছে সরকার। কেন এমনটা করা হল? আদালতের প্রশ্নের মুখে বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েই উত্তরাখণ্ড সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, 'মুখ্যসচিব ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন বনদপ্তরের কোনও আধিকারিক বা কর্মীকে নির্বাচনী দায়িত্বে না রাখার জন্য। তাঁদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' রাজ্যের আইনজীবীর এমন উত্তরে পালটা আদালতের তরফে জানানো হয়, 'এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আপনি কেবল অজুহাত দিচ্ছেন।'
[আরও পড়ুন: সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা শচীনের নিরাপত্তারক্ষীর]
রাজ্যের এমন উত্তরে ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী জানান, 'রাজ্যের ৪০ শতাংশ জঙ্গল আগুনের গ্রাসে সেখানে সরকার পক্ষের আইনজীবীর এমন উত্তর অত্যন্ত দায়সারা।' পালটা সরকারি আইনজীবী বলেন, 'নতুন করে আর কোথাও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি।' পাশাপাশি রাজ্য জানায়, আগুন নেভাতে কেন্দ্রের থেকে পর্যাপ্ত আর্থিক সাহায্য পায়নি রাজ্য সরকার।' একইসঙ্গে জানানো হয়, 'রাজ্য ও কেন্দ্রের ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হোক। ইতিমধ্যেই আগুন নেভাতে ৯০০ কর্মী কাজ করছেন। ৪২০ টির বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় একদিন অন্তর বৈঠক করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা ১০০ শতাংশ চেষ্টা করছি সবটা সামলানোর।' পাশাপাশি পর্যাপ্ত কর্মী নিয়ে আদালতের প্রশ্নের উত্তরে সরকারের তরফে জানানো হয়, গত বছর ১২০৫ জন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি ফাঁকা পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্য ভীষণভাবে প্রয়োজন বলেও জানান রাজ্যের আইনজীবী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলা হয়, কেন্দ্রের কাছে ১০ কোটি টাকার আবেদন জানানো হয়েছিল অথচ মাত্র ৩.১৫ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে দফায় দফায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১১৪৫ হেক্টর বনভূমি পুড়ে ছাই হয়েছে। এই ঘটনায় বার বার প্রশ্ন উঠেছে সরকারের ভূমিকা নিয়ে।