সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের মসজিদে জোড়া সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে সরব হয়েছিলেন সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই৷ টুইট করে জানিয়েছিলেন, খবর শুনে তাঁর হৃদয় ভেঙে গিয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি তাঁর সহানুভূতি জানিয়েছিলেন৷ মালালার এই ভূমিকা সমালোচনার মুখে পড়েছে নেটদুনিয়ায়৷
[ আরও পড়ুন : মাসুদ ইস্যুতে ফের চাপে পাকিস্তান, রাষ্ট্রসংঘে ভারতের পাশে ‘ত্রিশক্তি’]
নেটিজেনদের অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, মালালা নিউজিল্যান্ডের জঙ্গি হামলায় বিরোধিতায় মুখর। অথচ তাঁর দেশেই দুই কিশোরীকে জোর করে ধর্মান্তকরণের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, তা নিয়ে মুখে কুলুপ কেন? এই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে৷ ১৩ মার্চ, ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করেছিল শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি ব্রেন্টন ট্যারান্ট৷ প্রায় একই সময়ে পৃথিবীর আরেক প্রান্তে, পাকিস্তানেও ঘটে গিয়েছিল আরেক সাড়া জাগানো ঘটনা৷ সেখানে রবিনা এবং রিনা নামে দুই হিন্দু কিশোরীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল৷ বিভিন্ন মহলে পাকিস্তানের এই কাজ অত্যন্ত সমালোচিত হয়৷ ভারতও এনিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল৷ তবে এই বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের ঘরের মেয়ে মালালার কোনও প্রতিবাদ কিংবা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ আর তাতেই নেটিজেনদের একাংশের রোষের মুখে পড়েছে সদ্য তরুণী মালাল ইউসুফজাই৷
আসলে, মালালার জীবনের দিকে তাকালে বোঝা যাবে, সে নিজে জঙ্গি হামলায় মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসা এক মেয়ে৷ ২০১২ সালে খাইবার পাখতুনখাওয়ায় স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসে উঠে মালালাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল এক জঙ্গি৷ কপালের পাশে গুলি লাগে৷ বেঁচে থাকা কিছুটা অসম্ভবই ছিল৷ সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন কঠিন লড়াই চালানোর পর শিয়রে থাকা শমনকে হঠিয়ে দিয়েছিল বছর চোদ্দর কিশোরী৷ এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহে পাকিস্তানে থাকা আর তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না৷ নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছিল৷ ব্রিটেন সাদরে তাকে আশ্রয় দেয়৷ সেখানেই পড়াশোনা করার পাশাপাশি আগের মতো নিজের ব্লগ লেখা এবং সামাজিক বিভিন্ন কাজের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হয়ে পড়ে মালালা৷ লিখে ফেলে আত্মজীবনী – আই অ্যাম মালালা৷ তারপরের কথা সকলেরই জানা৷ বিশ্বজুড়ে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে ২০১৪ সালে, মাত্র ১৭ বছরে ভারতের কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় নিজের নাম লেখায় পাকিস্তানের মেয়েটি৷ রাষ্ট্রসংঘে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে তার বক্তৃতা – ‘ওয়ান চাইল্ড, ওয়ান বুক, ওয়ান পেন’ বহুল প্রশংসিত হয় সবমহলে৷
[ আরও পড়ুন : সমকাম-পরকীয়া অপরাধ! পাথর ছুঁড়ে খুনের নিদান ব্রুনেইয়ে]
মালালার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, জঙ্গি হামলার যে কোনও ঘটনা তাঁকে একটু বেশিই ব্যথিত করে৷ হয়ত ফিরে আসে তাঁর অতীত৷ তাই নিউজিল্যান্ডের হামলায় স্বভাবজাত প্রতিক্রিয়া দিয়েছে৷ এই মুহূর্তে ব্রিটিশ নাগরিক হলেও, মালালার মূল শিকড় তো পাকিস্তানে৷ তাই সেদেশে ধর্মান্তকরণের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়ত তার পক্ষে একটু চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
The post জঙ্গি হামলায় সরব, হিন্দুদের ধর্মান্তকরণে চুপ কেন? মালালার ভূমিকায় প্রশ্ন নেটদুনিয়ায় appeared first on Sangbad Pratidin.