সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ তুলেছিলেন স্বামী। আর সেই কারণেই আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী খোরপোশের অর্থ স্ত্রীকে না দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়াও দিয়েছিল দায়রা আদালত। রায়ে জানিয়েছিল “ব্যভিচারের দায়ে অভিযুক্ত স্ত্রীকে খোরপোশের টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।” কিন্তু সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ– বিচ্ছিন্ন হলেও স্বামীর মতোই জীবনযাত্রা ভোগ করার অধিকার রয়েছে স্ত্রীর, যতই তাঁর বিরুদ্ধে পরকীয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনুক স্বামী।
এদিন এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিচারপতি প্রকাশ নায়েক বলেন, ‘‘স্বামী আরামের জীবন কাটাচ্ছেন, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা উপভোগ করছেন আর বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রী সমস্ত সুখ থেকে বঞ্চিত- আদালত এমনটা হতে দিতে পারে না। দায়রা আদালত যে রায় দিয়েছিল, তাতে কোনও যুক্তি নেই।’’
[আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে ঊর্ধ্বমুখী দেশের কোভিড গ্রাফ, গত ২৪ ঘণ্টায় বাড়ল সংক্রমণ]
প্রসঙ্গত, যে ঘটনার সূত্র ধরে সাম্প্রতিক এই রায়, সেখানে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন স্ত্রী। ২০০৭ সালে দম্পতির বিয়ে হয়েছিল, ২০২০ সালে অভিযোগ আনেন স্ত্রী। ২০২১ সালের আগস্টে আদালত রায় দেয়, বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রীকে মাসে ৭৫,০০০ টাকা করে খোরপোশ দিতে হবে স্বামীকে। আর সঙ্গে ৩৫,০০০ টাকা বাড়িভাড়া।
কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে অভিযোগ জানান স্বামী। স্ত্রী ব্যভিচারে জড়িত, এই অভিযোগ এনে খোরপোশ বাতিলের আবেদন জানান। একদিকে স্বামীর দাবি ছিল, স্ত্রী তাঁরই এক বন্ধুর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত। অন্যদিকে, স্ত্রীর আইনজীবীর পালটা দাবি করেন প্রাক্তন স্বামীই ওই বন্ধুকে পাঠিয়েছিল। ওই বন্ধুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার পালটা অভিযোগও জানান স্ত্রী।
অভিযোগ-পালটা অভিযোগের পালা পেরিয়ে দায়রা আদালত স্ত্রীকে দেয় খোরপোশের টাকা বাতিলের রায় দেয়। কিন্তু সেই রায় বম্বে হাই কোর্ট (High Court of Bomba) বাতিল করে দিয়েছে। হাই কোর্টের বিচারপতির যুক্তি, স্ত্রী মাসে যে ৩৮,০০০ টাকা নিজে উপার্জন করেন, তা দিয়ে জীবনযাত্রা চালানো, ঘরভাড়া দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তিনি একা থাকেন। তাই স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া ৭৫,০০০ টাকার খোরপোশ স্ত্রীর জন্য জরুরি।