সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবলা প্রাণীদের সঙ্গে সেলফির কোনও সম্পর্কই নেই৷ অথচ সেলফির নেশা যে কী মারাত্মক তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এরাই৷ চিড়িয়াখানায় বা টুরিস্ট স্পটে প্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সেলফির আবদার মেটাতে অত্যাচারের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের৷ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কারও দাঁত তুলে নেওয়া হচ্ছে৷ কাউকে বা আবার কড়া ডোজের ড্রাগের নেশায় বুঁদ করে রাখা হচ্ছে৷
সেলফির ঝোঁকে বেঘোরে মানুষের তো প্রাণ যাচ্ছেই, তবে এবার এর জেরে প্রাণ ওষ্ঠাগত বন্যপ্রাণীদেরও৷ মানুষের সংস্রবে থাকাই কাল হয়েছে তাদের৷ সম্প্রতি এক লরিসের দাঁত তুলে নেওয়ার ঘটনায় চমকে উঠেছে সারা বিশ্ব৷ থাইল্যান্ডের এক বন্যপ্রাণ সংস্থা এ ঘটনা সামনে আনলে হইচই পড়ে৷ জানা যায় পর্যটকদের সঙ্গে ছবি তুলিয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রাণীটিকে আটক করত কিছু ব্যক্তি৷ তারাই এভাবে পশুটির দাঁত তুলে দিয়েছে যাতে সেটি ছবি তোলার সময় কামড়াতে না পারে৷ দাঁত তুলতে গিয়ে লরিসটির উপর উপর যে রীতিমতো অত্যাচার চালানো হয়েছে সে নমুনাও পেয়েছেন সংস্থার কর্মীরা৷ দাঁতহীন লরিসটি স্বাভাবিকভাবে প্রকৃতিতে আর বাসও করতে পারবে না, কেননা খাদ্য সংগ্রহে সমস্যা হবে৷ সেক্ষেত্রে এই উদ্ধারকেন্দ্রেই জীবন অতিবাহিত করতে হবে সেটিকে৷
শুধু এই লরিসই নয়, খোদ পশুরাজ সিংহও মানুষের সেলফির অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি৷ আর্জেন্টিনার এক চিড়িয়াখানায় সিংহকে কড়া ডোজের ড্রাগ দেওয়া হত৷ প্রচণ্ড নেশায় পশুরাজ ঢুলতে থাকলে পর্যটকরা এসে ছবি তুলতেন৷
দেশে-বিদেশে বেড়াতে গিয়ে সাধারণত মানুষরা কিছু স্মৃতি নিজেদের কাছে রেখে দিতে চান৷ এতদিন তা হয়ে এলেও স্মার্টফোনের যুগে যে সেলফি হিড়িক তা ছিল না৷ ফলত দূর থেকেই ছবি তুলে ক্ষান্ত হতেন অত্যুৎসাহী পর্যটকরা৷ কিন্তু এখন সেই বাধ্যবাধকতা নেই৷ আর তাই জুলুম বেড়েছে প্রাণীদের উপর৷ তবে বিভিন্ন জায়গায় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থাগুলি এ ব্যাপারে প্রচার শুরু করেছে. মানুষের খপ্পর থেকে পশুদের বাঁচাতে চলছে ব্যাপক সচেতনার প্রসার৷ কিন্তু সেলফি-রোগ না কাটলে পশুরা যে কতটা রক্ষা পাবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷
The post পর্যটকদের সেলফির আবদারে অত্যাচারিত প্রাণীকুল! appeared first on Sangbad Pratidin.