সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়ি থেকে নিজের অফিস এখন হাঁটা পথে মিনিট দু’য়েক। লাঞ্চের পর সেখানে বসে টিভিতে ভারতীয় দলের খেলা দেখলেন। খেলা শেষ হওয়ার আগে টুইটও করলেন। বিকেলে বাড়ি ফিরতে অফিস থেকে বেরোতে দেখলেন মিডিয়া দাঁড়িয়ে। না, না করেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি আর মুখ বন্ধ করে থাকতে পারেন। মেজাজ বেশ ফুরফুরে। ঋষভের ব্যাটিং দেখে আপ্লুত। উচ্ছ্বসিত। এক সময় সৌরভ নিজে বাজি ধরেছিলেন ঋষভের উপর। হচ্ছে বা হচ্ছে না করে ঋষভ হারিয়ে যাচ্ছিলেন। তবু দিল্লি ক্যাপিটালসের কিপার ব্যাটসম্যানের উপর তিনি ভরসা রেখেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই এর উত্তরও মিলছিল। সেই ধারবাহিকতা পাওয়া গেল আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেও। ১১৮ বলে ১০১ রান করে দলকে টানার পাশাপাশি ইংল্যান্ডকে চাপের মুখে ফেলে দিলেন ঋষভ। সৌরভ বিকেলে বললেন,“ আউটস্ট্যান্ডিং। অবিশ্বাস্য। কি খেলল বলুন তো! একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল।”
কথা এগিয়ে যাওয়ার আগে সৌরভের টুইটের দিকে তাকানো যাক। সৌরভ লিখেছেন,“ও ঠিক কতটা ভাল? অবিশ্বাস্য। চাপের মুখে কী অসাধারণ ইনিংস। তবে এটা প্রথম নয়। এবং নিশ্চিত এটা শেষও নয়। সামনে বছরগুলোয় সব ফরম্যাটে সর্বকালের অন্যতম সেরা হয়ে উঠবে। এরকমই আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাটিং করে যাও। তা হলে ম্যাচ উইনার ও স্পেশাল হয়ে থাকবে।”
[আরও পড়ুন: পাক ক্রিকেট লিগে জঘন্য খাবার! ইংরেজ ক্রিকেটার হেলসের পোস্ট ঘিরে নেটদুনিয়ায় হইচই]
সৌরভ ভুল বলেননি। ৮০ রানে চার উইকেট যাওয়ার পর ঋষভ পন্থ মাঠে নামলেন। সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি যখন আউট হয়ে ফিরলেন, তখন ভারত ২৫৯। দলকে ৫৪ রানের লিড দিয়ে ঋষভ থামলেন। ১৩টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে টেস্টে তিন নম্বর সেঞ্চুরিটি করলেন। যার মধ্যে দেশের মাঠে এবারই প্রথম। অনেকে বলতেন সাদা বলের ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলেও টেস্টে পারবেন না ঋষভ। কিন্তু এর মধ্যে তিনটি সেঞ্চুরি যে এসে গেল। সৌরভ বলছেন,“ কোথাকার ম্যাচ কোথায় নিয়ে গেল। চাপের মুখে ব্যাট করতে নেমে একাই সব শেষ করে দিল।” সৌরভের সার্টিফিকেট ঋষভকে নিশ্চয় সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। তবে বাংলার পক্ষে এটা কতটা ভাল? ঋষভ টেস্টে জায়গা পাকা করা মানে ঋদ্ধিমানের দলের বাইরে চলে যাওয়া। এ ব্যাপারে সৌরভকে প্রশ্ন করা হয় তা হলে কি আপনার মনে হয় ঋদ্ধিমানের জায়গা কঠিন হয়ে গেল? এর উত্তর সৌরভ কি বলতে পারেন? যা বোঝাবার সেটাই বোঝালেন। কোনও উত্তর দিলেন না বোর্ড সভাপতি। এটা তো ঘটনা, ঋষভ প্রথম একাদশে থাকলে ঋদ্ধিকে মাঠের বাইরে বসতে হবে। আর সেটাই হচ্ছে। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।
সৌরভই শুধু নন, ঋষভের ইনিংস দেখে মুগ্ধ সুনীল গাভাসকর বলেছেন, “ প্রচন্ড চাপের মুখে ব্যাট করতে নেমেছিল। তখন চার উইকেট চলে গিয়েছে। একদিকে রোহিত থাকলেও ইংল্যান্ড মাথায় চড়ে বসতে চলেছে। সেই জায়গা থেকে নিজের খেলার বাইরে আসেনি। দিলখোলা ইনিংস ওর কাছ থেকে দেখতে পেলাম। বোলড ব্যাটিং বলতে যা বোঝায় আর কি। আশা করি ওর ব্যাটিং দেখে সবাই খুশি। ভারতীয় ক্রিকেট ফ্যানদের আনন্দ দিয়েছে। আর এই ইনিংসটাই ভারতকে চাপ থেকে বের করে এনেছে। না হলে খেলা অন্যরকম হতে পারত।” এছাড়া শিখর ধাওয়ান, মনোজ তিওয়ারি, হরভজন সিংরাও ঋষভের প্রশংসা করেছেন।