সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করা ভুল ছিল। ভোটের প্রায় দেড় বছর পর অকস্মাৎ ‘বোধোদয়’ হল বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতীর। সরকারিভাবে ঘোষণা করে দিলেন, আর অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) সঙ্গ দেবে না তাঁর দল। বরং সমাজবাদী পার্টিকে (Samajwadi Party) হারাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে। আর সেজন্য যদি বিজেপিকে (BJP) সমর্থন করতে হয়, তাতেও আপত্তি নেই বহুজন সমাজ পার্টির। ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বেহেনজির এই ডিগবাজি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
মায়াবতীর দল এখন বেশ কোণঠাসা। নিজের রাজ্য উত্তরপ্রদেশেই এখন কার্যত প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন তিনি। গতকালই মায়াবতীর দলের সাত বিধায়ক অখিলেশের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। তাঁরা চাইছিলেন, রাজ্যসভা নির্বাচনে আলদা প্রার্থী না দিয়ে সমাজবাদী পার্টিকেই সমর্থন করুক বিএসপি (BSP)। কিন্তু মায়াবতী তাঁদের কথা না শুনে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে আসলে লাভ হবে বিজেপির। দলের সুপ্রিমোর এই সিদ্ধান্ত না মানতে পেরে ওই সাত বিধায়ক সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিতে পারেন বলে জনশ্রুতি শোনা যাচ্ছিল। গতকালই তাঁদের সাসপেন্ড করেছেন বিএসপি সুপ্রিমো। তারপরই আজ সাংবাদিক বৈঠকে বিস্ফোরণ ঘটালেন। বললেন,”লোকসভা ভোটে আমরা সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করে ভুল করেছিলাম। ভোটের পর আমাদের সঙ্গে ওঁরা যা আচরণ করেছে, তাতে আমরা ভুল বুঝতে পারছি। আমাদের আরও ভাবা উচিত ছিল। এমনকী মুলায়মের বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালের সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তও ভুল ছিল।” মায়াবতী বলেন,”আমরা ঠিক করেছি আসন্ন বিধান পরিষদের নির্বাচনে আমরা সমাজবাদী পার্টির বিরোধিতা করব। যে কোনও মূল্যে ওদের দ্বিতীয় প্রার্থীকে হারাব। আর সেজন্য যদি আমাদের বিজেপিকে ভোট দিতে হয়, সেটাই দেব।”
[আরও পড়ুন: প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি! মন্দার আশঙ্কা উড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী]
মায়াবতীকে নিয়ে অনেকদিন ধরেই প্রশ্ন ছিল বিরোধী শিবিরে। একাধিক ইস্যুতে বিরোধীরা যখন তেড়েফুঁড়ে বিজেপিকে আক্রমণ করছেন, তখনও কার্যত নীরব ছিলেন তিনি। উলটে পরিযায়ী শ্রমিক, নারী নির্যাতনের মতো ইস্যুতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi) যখনই উত্তরপ্রদেশ সরকার তথা যোগী আদিত্যনাথের বিরোধিতা করেছেন, তখন যোগীকে আক্রমণ না করে পালটা কংগ্রেস তথা প্রিয়াঙ্কাকেই আক্রমণ করে এসেছেন মায়াবতী। কংগ্রেস অনেকদিন ধরেই বলে আসছিল মায়াবতী বিজেপির অঘোষিত মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে আসছেন। বৃহস্পতিবার কার্যত সেটাই সত্যি প্রমাণ করে দিলেন বিএসপি নেত্রী। সাফ জানিয়ে দিলেন, যে কোনও মূল্যে উত্তরপ্রদেশের বিধান পরিষদের নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টিকে হারাতে চান তিনি। আর সেজন্য প্রয়োজনে বিজেপিকে সমর্থনেও আপত্তি নেই বিএসপি সুপ্রিমোর।