shono
Advertisement

বঙ্গে ভোট বৈতরণী পার করাতে ‘ট্রাম্প কার্ড’স্বাস্থ্যসাথী! আশায় বুক বাঁধছে তৃণমূল

পালটা আয়ুষ্মান ভারতের টনিকে ভরসা গেরুয়া শিবিরের।
Posted: 10:42 AM Mar 24, 2021Updated: 10:42 AM Mar 24, 2021

সন্দীপ চক্রবর্তী: ছেলের মাথায় টিউমার ধরা পড়ার পর থেকেই বেসামাল লেগেছিল ভদ্রলোককে। কোনওরকমে নাকে মুখে গুঁজে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চলে এসেছেন। দেখা হয়েছিল ভিজিটর্স রুমে। সেই লোকটির বেশভূষা দেখে উদ্বিগ্নতা ধরা পড়েনি। কিন্তু নিজেকে ‘গরিব’ বলে দাবি করছিলেন। আচমকা এসেছিল কীভাবে খরচ জোগাচ্ছেন, সেই প্রসঙ্গ।  জবাব দিয়েছিলেন. দিদি স্বাস্থ্য সাথী দিয়েছেন, চিন্তা কি!

Advertisement

সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই চাহিদা বেড়েছে ‘মেডিক্লেম পলিসি’র। মধ্যবিত্ত বাঙালি গ্রাসাচ্ছাদনের টাকা জোগাড় করেই চেষ্টা করে স্বাস্থ্যবিমার টাকা মেটানোর। আর এই উপযোগিতাকে ধরেই ইস্যু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। প্রায় সব দলের ইস্তাহারেই ঠাঁই হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিমার। স্বাস্থ্যসাথী না আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প? কোনটি ভাল? ভোটের আগে আবার এসেছে সেই বহুচর্চিত প্রশ্ন।

[আরও পড়ুন : প্রচারে বেরিয়ে দলীয় কর্মীকে সপাটে চড় মানস ভুঁইয়ার, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিড়ম্বনায় তৃণমূল]

স্বাস্থ্যসাথীর জনপ্রিয়তা অবশ্যই এই দু’টি প্রকল্পকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আগে থেকেই অসংগঠিত শ্রমিকদের থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক, সিভিক ভলান্টিয়ার, হোম গার্ড, আশা—অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যুক্ত করা হয়েছিল। তার আগে ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প অনুমোদিত হয়। গত বছরের পুজোর পরই আমজনতার বিমা হয়ে ওঠে এটি। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে দেখা গেল, দীর্ঘ লাইন দিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করছেন মানুষ। শিবির করা হয়েছে বিভিন্ন ব্লকে, গ্রামে। কার্ড দেওয়া হয়েছে বাড়ির কর্ত্রী বা মহিলার নামে। বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসাজনিত সুবিধা পাবেন পরিবারের সদস্যরা। এবং উল্লেখযোগ্য যে পুরো টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। নবান্নের তথ্য অনুযায়ী, দুয়ারে সরকার-এ ৭৭ লক্ষের বেশি কার্ড দেওয়া হয়েছে। আর সব মিলিয়ে জনসংখ্যার কার্ড দেওয়া হয়েছে দেড় কোটির বেশি। জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ এই কার্ডের আওতায় এসেছেন বা তাঁদের পরিবার কার্ড নিয়েছে। ১০ লক্ষ ৫১ হাজারের বেশি মানুষ হাসপাতালে পরিষেবা পেয়ে গিয়েছেন বা ভরতি হয়েছেন। দু’হাজার ২৪০টি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা দিচ্ছে, রাজ্যের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত এরা। উল্লেখযোগ্যভাবে এর মধ্যে ভেলোর বা এইমসও রয়েছে। অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন মানুষ। তবে বিতর্ক যে একদমই নেই, তা নয়। শাসকদল এই প্রকল্পকে সাথী করে ভোট-বৈতরণী অনায়াসে পেরিয়ে যাওয়ার দাবি করছে।

[আরও পড়ুন : ধনীদের ভোট! রাজ্যের প্রথম দফা নির্বাচনের ১৯ জন প্রার্থী কোটিপতি]

অনস্বীকার্য যে সাধারণ মানুষ এই সুবিধার কথা অস্বীকার করছেনও না। কিন্তু প্রথম দিকে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরানোর খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি বা স্বাস্থ্য কমিশনের দাওয়াই হোক, বদলে গিয়েছে সেই ছবি। সরকারের পক্ষ থেকে হাসপাতালকে রোগ ভিত্তিতে বিমার টাকা বাড়ানোও হয়েছে। ফলে হাসপাতাল বা নার্সিংহোম থেকে রোগী ফেরত অনেকটাই কম। বিরোধীদের অবশ্য প্রশ্ন, এই প্রকল্পকে এভাবে টানা কতটা সম্ভব? বিজেপি আবার ‘আয়ুষ্মান’কে বেশি উপযোগী বলে দাবি করছে। এই প্রকল্প যে ভোটের বড় ইসু্য তা নিয়ে বাংলার কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। এটা মনে করছেন ভোট—বিশেষজ্ঞরাই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement