সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিরোশিমা (Hiroshima) ও নাগাসাকি-এই দুই শহরের নামের ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা। এবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে গেল এই দুই শহরের নাম। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বললেন, হিরোশিমা ও নাগাসাকির (Nagasaki) বিরুদ্ধে হামলা করে যেভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লড়া হয়েছিল,সেইভাবেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হতে পারে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে আলোচনায় পুতিন এই কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিমি রাষ্ট্রনেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, তবে কি এবার ইউক্রেনে (Russia-Ukraine War) পরমাণু হামলা করতে চলেছে রাশিয়া?
ঠিক কী বলেছেন পুতিন? তাঁর মতে, “হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা ফেলার পরেই জাপান আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল এই হামলার পরেই। কাজেই বড় শহরগুলিতে হামলা করলেই যুদ্ধে জেতা যায় না। অপেক্ষাকৃত ছোট শহরকে গুঁড়িয়ে দিলেও যুদ্ধ শেষ করে দেওয়া যায়।” ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এই কথোকথনের পরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, এবার হয়তো ভয়াবহ আঘাত হেনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে চাইছেন পুতিন (Vladimir Putin)। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পুতিনের এহেন মন্তব্যের পর বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ম্যাক্রোঁ। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলা না করেও যুদ্ধ জেতার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন পুতিন, এমনটাই মনে করেছেন পশ্চিমি রাষ্ট্রনেতাদের অধিকাংশ।
[আরও পড়ুন: নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তাবে সায়, ফের রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার পাশে ভারত]
কিছুদিন আগেই রাশিয়ার তরফে বলা হয়েছিল, পারমাণবিক বোমা ফেলার ষড়যন্ত্র করছে ইউক্রেন। রাষ্ট্রসংঘেও এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে মস্কো। তবে এই দাবিকে আমল দেয়নি কোনও পক্ষই। বরং আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স- সহ একাধিক দেশ জানিয়েছিল, আসলে পারমাণবিক হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে রাশিয়াই। সেইজন্যই ইউক্রেনের নামে দোষারোপ করছেন পুতিন। অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা হওয়ার পরেই শোনা যাচ্ছে, কৃষ্ণসাগরের উপর দিয়ে হামলা করবেন পুতিন।
ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের নানা জায়গায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। শীতের সময় আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়াবে রাশিয়া, সেটা আন্দাজ করা গিয়েছিল। তবে কিছুদিন আগেই পুতিন বলেছিলেন, এখনই ইউক্রেনে পরমাণু হামলা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু ম্যাক্রোঁর সঙ্গে আলোচনার পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ওয়াকিবহাল মহল। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই নিজের দেশে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়েছেন পুতিন। তাই ভয়ানক হামলা করে যুদ্ধ শেষ করে দেবেন পুতিন, এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।