দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন নির্যাতিতা ও তাঁর মায়ের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। তোপ দেগেছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল ধর্ষিতার পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করেই ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে।” এদিকে অন্য এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতেই ওই অভিযুক্ত রিজু হেলাকে গ্রেপ্তার করছে চুঁচুড়া থানার পুলিশ।
এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ওই নির্যাতিতার পরিবার চুঁচুড়া মহিলা থানায় অভিযোগ জানান। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের বলা হয়েছিল যেহেতু অভিযুক্তর বিরুদ্ধে থানায় দু‘দিন আগেই অন্য এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাই দ্বিতীয়বার কোনও অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। এরপরই বিকেলের দিকে ওই নাবালিকার পরিবার স্থানীয় বিজেপি নেতা কর্মীদের সহযোগিতায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বুধবার সকালে নির্যাতিতা ও তাঁর মা চুঁচুড়া থানায় লিখিত বয়ান দিয়ে জানান, তাঁরা চাপে পড়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এখন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান। ইতিমধ্যে আরও এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ ওই অভিযুক্তকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে। বুধবার সকাল থেকেই ধর্ষণের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ভোটযুদ্ধের আগে ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট টিম বিজেপির, ইস্তেহার কমিটির ইনচার্জ অনুপম হাজরা]
অন্যদিকে, অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির দাবিতে বিজেপি (BJP) কর্মীরা চুঁচুড়া থানার সামনে বুধবার সকালে বিক্ষোভ দেখায়। ততক্ষণে নির্যাতিতার মা ও নির্যাতিতা থানায় গিয়ে তাঁদের অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন শুনে বিক্ষোভস্থলে হাজির হন লকেট। তিনি বলেন, “অভিযোগ হোক আর অভিযোগ নাই হোক, দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিজেপি রাস্তায় থাকবে।” লকেট রীতিমতো তোপ দেগে বলেন, “তৃণমূলের চাপেই নির্যাতিতা ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে।” তাঁর কথায়, “কোনও মা তাঁর মেয়ের উপর অত্যাচার নিয়ে কখনও মিথ্যে বলতে পারেন না।” শাসকদলের নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিগ্রস্ত বলেও এদিন তোপ দাগেন তিনি। বিকেলে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। অসিতবাবু সাংসদের বক্তব্যের পালটা দিয়ে বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে তাই খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে চাইছেন।” এদিকে অভিযোগ দায়ের ও প্রত্যাহার নিয়ে রীতিমতো ধন্দে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ।